নিজেদের কারখানা এবং শোরুমে ৫০ জন বোবা এবং ট্রান্সজেন্ডারকে (রূপান্তরিত নারী) নিয়োগ করতে চান মিষ্টি এবং বেকারি পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিজল কর্তৃপক্ষ। দৈনিক আজাদী সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল মালেকের গত ১০ মার্চ প্রকাশিত ‘তারাও করবে জয়’ শীর্ষক লেখা পড়ে সিজলের চেয়ারম্যান লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ নুরুল আলম নিজের প্রতিষ্ঠানে তাদের চাকরি দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উক্ত প্রতিবেদনে কলকাতার কেএফসির একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি পুরোপুরি বোবা লোকবল দিয়ে পরিচালিত হওয়ার তথ্য রয়েছে। একজন সুস্থ লোকের সাথে অনেকগুলো বোবা লোক দিয়ে কেএফসি উক্ত ফ্র্যাঞ্চাইজি পরিচালনা করছে। দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত উক্ত লেখায় কেএফসির ওই তথ্যের পাশাপাশি ট্রান্সজেন্ডারদের সাফল্যের কাহিনীও রয়েছে।
সিজল চেয়ারম্যান লায়ন আলহাজ্ব মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, ১৯৯৭ সালে সিজল যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ দিনে সিজল বর্তমানে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাশাপাশি জেলা পর্যায়েও বেশ কিছু শোরুম পরিচালনা করে। বেশ কয়েকটি কারখানায় সিজল নিজেদের মিষ্টি ও বেকারি পণ্য উৎপাদন করে। এসব শোরুম ও কারখানাতে এক হাজারেরও বেশি মানুষ কাজ করেন। এদের মধ্যে প্রতিটি শোরুমে একজন করে এবং কারখানাগুলোতে পাঁচ সাতজন করে বোবা ও তৃতীয় লিঙ্গের লোকের চাকরি দেয়ার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক সমাজের অবহেলিত এই জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে পরিণত করার একটি পথ বাতলে দিয়েছেন। ওই পথ ধরেই আমি অন্তত ৫০ জন মানুষকে চাকরি দিতে চাই। তিনি বলেন, বোবা কিংবা তৃতীয় লিঙ্গের লোকদের একটু প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে অনায়াসে মূল স্রোতের লোকবলে পরিণত করা যাবে। আমাদের শোরুম এবং বেকারিতে কাজের চমৎকার পরিবেশ রয়েছে।
সিজল চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মদ নুরুল আলম আরো জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি সিজলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদুল হকসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেছেন। সকলেই সমাজের এই অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে চাকরি দেয়ার ব্যাপারে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন।
আলহাজ্ব মোহাম্মদ নুরুল আলম দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেকের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, এমন একটি বিষয় সবার সামনে নিয়ে আসার জন্য তিনি অবশ্যই ধন্যবাদের দাবিদার। বিষয়টি সামনে নিয়ে আসায় সমাজের একটি অবহেলিত গোষ্ঠী উপকৃত হবে বলেও মন্তব্য করেছেন নুরুল আলম। তিনি বলেন, সিজলের মতো করে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোও যদি দু-চার জন করে বোবা, বধির কিংবা তৃতীয় লিঙ্গের লোকদের চাকরির ব্যবস্থা করে তাহলে সমাজ উপকৃত হবে। অনেকগুলো মানুষ আর্থিক এবং সামাজিক কষ্ট থেকে নিস্তার পাবে।