নগরীর আলোচিত সিআরবির জোড়া খুন মামলার চার্জগঠন পিছিয়েছে। আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করায় ৩য় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিন চার্জগঠন পিছিয়ে আগামী ২৬ এপ্রিল নতুন তারিখ ধার্য করেন। গতকাল বুধবার দুপুরে এ বিষয়ের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কেশব নাথ আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কেশব নাথ বলেন, বুধবার চার্জগঠনের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আসামিপক্ষ সময়ের আবেদন করায় তার আর হয়নি। আশা করছি, পরবর্তী ধার্য তারিখে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন হয়ে যাবে। তিনি জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুর দিকে মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে মামলাটি তার কোর্টে আসে। এর আগে কয়েক মাস মামলাটি সেখানে ছিল। তারও আগে মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ছিল।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এ ঘটনায় ৬২ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। সে সময় আসামি পক্ষের নারাজী আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ আড়াই বছর পর পিবিআই নতুন করে দুজনকে যুক্ত করে ৬৪ জনের বিরুদ্ধে মহানগর হাকিম আদালতে সম্পূরক চার্জশির্ট দাখিল করেন। সম্পূরক চার্জশিটে অভিযুক্ত ৬৪ আসামি হলেন, যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর ও তার গ্রুপের যুবলীগ নেতা রিটু দাশ, প্রেমাশীষ মুৎসুদ্দী, অজিত বোস, মোহন তাঁতী, খোকন চন্দ্র তাঁতী, অমিত মুহুরী, অজিত দাশ, চান মিয়া, রাজু, রাকেশ, সুমন, টিটু দাশ, লাবলু ঘোষ, টিপু, আসলাম, ছোটন বড়ূয়া, সুমন চৌধুরী, শিবু দাশ চৌধুরী, শিমুল প্রসাদ পিন্টু, ফারুক, জসিম, মনির মিয়া, আনু মিয়া, ইউসুফ, জাহিদ, জহির, ফরিদ ও মনির।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমন ও তার গ্রুপের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু, ছাত্রলীগ নেতা অমিত চক্রবর্তী শশি, মোহাম্মদ টিপু, ওসমান গণি দুলু, মনোয়ারুল আলম চৌধুরী, জাহেদ, আমিন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, শরীফ আহমেদ, আমির হোসেন আমু, রায়হান আহমদ, কামরুল হাসান, নজরুল ইসলাম, রানা আহমেদ, মনিরুজ্জামান দিনার, হাসমত আলী রাসেল, সুজয়মান বড়ুয়া, জমির উদ্দিন, আবু জাফর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, রাজু মুন্সী, ফয়সাল আহমেদ, মিজানুর রহমান, জাফর, পিয়াল আইচ, তারেকুর রহমান, ইলিয়াছ, জাবেদ হোসেন, রুবেল চন্দ্র দাশ, নাজমুল হাসান, আশরাফুল হোসেন, মিলন, আশরাফুল আলম, রবিউল ইসলাম জিলানী, কিয়াস কুমার দাশ ও বিশ্বজিত দাশ। আদালত সূত্র জানায়, জোড়া খুনের এ মামলায় গতকালের ধার্য তারিখে বাবর-লিমনসহ জামিনে থাকা ৫২ জন আসামি হাজির ছিলেন। বাকিদের মধ্যে একজন মারা গেছেন এবং অন্যরা পলাতক।
রেলওয়ে পুর্বাঞ্চলের কোটি টাকার দরপত্রের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে ২০১৩ সালের ২৪ জুন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর এবং ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল আলম ওরফে লিমনের অনুসারীদের মধ্যে চট্টগ্রামের সিআরবি (রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর) এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে গুলিতে প্রাণ হারান যুবলীগ কর্মী সাজু পালিত (২৮) ও শিশু মোহাম্মদ আরমান (৮)। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানার এসআই মহিবুর রহমান বাদি হয়ে হয়ে বাবর-লিমনসহ ৮৭ জনের নামোল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।