কারখানা পোড়ার পরেও বন্ড সুবিধায় ৭৫ ইউপি!

প্রিমিয়ার এক্সেসরিজ লিমিটেড

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১১ মার্চ, ২০২১ at ৭:১৯ পূর্বাহ্ণ

কারখানা পুড়ে যাওয়ার পরেও নগরীর বায়েজিদ থানাধীন জালালাবাদ এলাকার প্রিমিয়ার এক্সেসরিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে বন্ড সুবিধা আওতায় ইউটিলাইজেশন পারমিশন (ইউপি) নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে আগুনে পুড়ে যাওয়ার দুই মাসের মধ্যে ৭৫টি ইউপি নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন কাস্টমসের বন্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। এদিকে বন্ডেড ওয়্যারহাউস কিংবা কোনো রপ্তানি কারখানায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে তা অবহিত হওয়ার পর কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের পক্ষ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করার বিধান রয়েছে। অভিযাগ রয়েছে, রহস্যজনক কারণে এক্ষেত্রে সেটি করা হয়নি। উল্টো প্রিমিয়ার এক্সেসরিজ লিমিটেডের নামে নতুন অস্থায়ী গুদামের অনুমোদন দেয় বন্ড কমিশনারেটের কর্মকর্তারা। জানা গেছে, গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক পৌনে ১১টার দিকে কে এইচ লতিফুর রহমানের মালিকানাধীন প্রিমিয়ার এক্সেসরিজ লিমিটেড কারখানায় আগুন ধরে। কাস্টমস বন্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রিমিয়ার এক্সেসরিজ লিমিটেডের ওয়্যারহাউসে পলিয়েস্টার ইয়ার্ন, কটন ইয়ার্ন এবং ডুপ্লেক্স বোর্ডের পরিমাণই বেশি ছিল। এক্ষেত্রে বন্ডেড ওয়্যারহাউসটিতে ১৮৬ টন পণ্য অনুমোদন থাকলেও রেজিস্টার অনুযায়ী সেখানে ৪৪৩ টন পণ্য ছিল। তবে কী পরিমাণ পণ্য পুঁড়ে গেছে, সেটি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলা যাবে না। ফায়ার সার্ভিসও বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। তবে আগুনে পুড়ে যাওয়ার পরে বন্ধ কারখানার অনুকূলে ইউপি দেয়ায় একজন বন্ড কর্মকর্তাকে বদলি করে দেয়া হয়েছে।
আগ্রাবাদ ফায়াস সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক জানে আলম দৈনিক আজাদীকে বলেন, আগুন লেগেছে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর। আমি জয়েন করেছি গত ফেব্রুয়ারিতে। তবে বিষয়টি আমি এখন জানতে পারলাম। যতটুকু জেনেছি, প্রতিষ্ঠানটির মালিক একটি আবেদন করেছেন। এটি নিয়ে আমাদের কমকর্তারা কাজ করছেন। এটি এখনো তদন্তাধীন বিষয়।
জানতে চাইলে প্রিমিয়ার এক্সেসরিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এইচ লতিফুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়ার পরে আমি বন্ড কাস্টমস থেকে আরেকটি গুদামের অনুমতি নিই। সে কারণেই মূলত ওই ইউপিগুলো নিয়েছিলাম। কারখানা পুঁড়ে যাওয়ায় উৎপাদন কোথায় করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সাবকন্ট্রাক্টে কাজ করছি। ওয়্যারহাউসে অনুমোদনের অতিরিক্ত পণ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনার কারণে ওয়্যারহাউসে অতিরিক্ত পণ্য জমে যায়, যার কারণে তখন বেশি পণ্য রাখতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট চট্টগ্রামের কমিশনার এ কে এম মাহাবুবুর রহমান দৈনিক আজাদীকে বলেন, প্রিমিয়ার এক্সেসরিজের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেও (এনবিআর) এটি অবগত আছে। বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে দখা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারার ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
পরবর্তী নিবন্ধনিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ারপ্রকোপ বাড়ছে