আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, আশ্রয়ন প্রকল্পের সহনীয়তা, দুর্যোগ নিরাপত্তা ব্যবস্থা, জীবিকা ও মানবাধিকারসহ বিভিন্ন দিক বিবেচনায় নোয়াখালীর ভাসানচর রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য নিরাপদ বলে দাবি করেছেন একদল গবেষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের একদল শিক্ষক পরিচালিত ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তর: সুবিধা এবং প্রতিকূলতা’ শীর্ষক এক গবেষণার বরাতে এ দাবি করা হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত এক সেমিনারে গবেষণার এই ফলাফল তুলে ধরা হয়।
মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার বিরান দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের এই পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১০ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পাঁচ দফায় মোট ১২ হাজার ২৮৪ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে ভাসানচরে বসবাসের উপযোগিতা নিয়ে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে নানা প্রশ্ন উঠে। এসব প্রশ্নের ভিত্তিতে সেন্ট্রাল ফাউন্ডেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজ (সিএফআইএসএস) অর্থায়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের গবেষক দল গত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি কয়েক দফায় কঙবাজার ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে এ গবেষণা পরিচালিত করেন। এছাড়া ভাসানচরের আশ্রয়ন প্রকল্পের সহনীয়তা ও বসবাসযোগ্যতার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্যানেল নিয়ে ভাসানচর পরিদর্শন ও তাদের মতামত নেওয়া হয়।
কঙবাজার ও ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসযোগ্যতার তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণার অত্যন্ত প্রচলিত গুণগত পদ্ধতি অবলম্বন করে গবেষণা কার্যটি পরিচালনা করা হয়। সেমিনারে ফলাফল তুলে ধরে গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, ভাসানচর বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক বেশি নিরাপদ একটি জায়গা। দ্বীপটিতে আধুনিক সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে, আয়-রোজগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, মূল ভূখণ্ড থেকে দ্বীপটিতে যাতায়াতের ভাল ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং মানবাধিকারের নিশ্চয়তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে।