চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২২ জুন থেকে শুরু হচ্ছে। গতকাল সোমবার ডিনস কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার এস এম আকবর হোছাইন স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২২ জুন থেকে ২৪ জুন, ২৮ জুন থেকে ১ জুলাই ও ৫ জুলাই থেকে ৮ জুলাই তারিখের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ভর্তি পরীক্ষার যাবতীয় প্রস্তুতি ও কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গত বছরের ন্যায় থাকলেও কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ডিন। এর মধ্যে ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের যোগ্যতায় জিপিএ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি ইউনিটেই আবেদনের ন্যূনতম জিপিএ অন্তত শূন্য দশমিক ৫০ বাড়ানো হবে। এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল ‘অটো পাস’ হওয়ায় ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আবেদনের যোগ্যতায় এই পরিবর্তন আনা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি আবেদনের নির্ধারিত যোগ্যতা হল এ ও সি ইউনিটে এসএসসি ও এইচএসসি মিলিয়ে জিপিএ ৮.০০। বি ইউনিট ও বি১ উপ-ইউনিটের ক্ষেত্রে যারা বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগ থেকে আবেদন করবে তাদের জন্য আবেদনের যোগ্যতা এসএসসি ও এইচএসসি মিলিয়ে জিপিএ ৮.০০। আর যারা মানবিক বিভাগ থেকে আবেদন করবে তাদের জন্য জিপিএ ৭.৫০ থাকতে হবে। অন্যদিকে ডি ইউনিটের ক্ষেত্রে জিপিএ ৭.৫০ থাকতে হবে। ডি১ উপ-ইউনিটের যোগ্যতা জানা যায়নি।
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে এ ইউনিটে আবেদনের যোগ্যতা ছিল জিপিএ ৭.৫। বি ইউনিট ও বি১ উপ-ইউনিটের যোগ্যতা ছিল বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য জিপিএ ৭ ও মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য জিপিএ ৬.৫। সি ইউনিটে আবেদনের যোগ্যতা ছিল জিপিএ ৭.৫। ডি ইউনিটের আবেদনের যোগ্যতা ছিল জিপিএ ৭। ডি১ উপ-ইউনিটের আবেদনের যোগ্যতা ছিল জিপিএ ৬।
সূত্র আরও জানায়, ভর্তি পরীক্ষা এবারও চারটি ইউনিট ও দুইটি উপ-ইউনিটে ক্যাম্পাসেই নেওয়া হবে। পরীক্ষা পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্ন থাকবে আগের মতই। ক্যাম্পাসে ২২ হাজার শিক্ষার্থী বসার মতো আসন রয়েছে। এক্ষেত্রে আবেদনকারী যদি ১৫ হাজারের মধ্যে হয়, তাহলে পরীক্ষা এক শিফটে অনুষ্ঠিত হবে। আর ১৫ হাজারের বেশি হলে দুই শিফটে নেওয়া হবে।
আবেদনের যোগ্যতা বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস.এম. মনিরুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, আবেদনের যোগ্যতা এবার বাড়বে। এ বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। তবে কত হবে সেটা এখনই সিদ্ধান্ত হয়নি। সম্ভাব্য তারিখের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা প্রাথমিক সিদ্ধান্ত। এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভায় এ বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এটি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
জানা যায়, এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ডিনস কমিটির এক সভায় ভর্তি পরীক্ষা আগামী ঈদুল ফিতরের পরে নেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের যোগ্যতা ও জিপিএ থেকে নম্বর থাকবে কিনা সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি সে সভায়। এরপর প্রতিটি অনুষদে বিভাগীয় সভাপতিদের নিয়ে ডিনরা ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সমপ্রতি সভা করেছেন। সেখানে ইউনিটভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের যোগ্যতা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন এসএম সালামত উল্যা ভূঁইয়া বলেন, আমরা ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু করেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ঈদের পরে নেওয়ার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এখনও তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। ভর্তি পরীক্ষা আমরা ক্যাম্পাসের ভেতরেই নেওয়ার চেষ্টা করব।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউট রয়েছে। গত বছর ৪টি ইউনিট ও ২টি উপ-ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম হয়েছে। ৪৮টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউটে ৪ হাজার ৯২৬টি আসনে শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পান। ভর্তি পরীক্ষা দুই শিফটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই নেওয়া হয়েছে।