দুই বিভাগের দ্বন্দ্ব না কাটতে এলো আরেক বিভাগ

চবি জীববিজ্ঞান অনুষদের বর্ধিত ভবনের কক্ষ

চবি প্রতিনিধি | শনিবার , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৫:৫৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের বর্ধিত ভবনের কক্ষ নিয়ে দ্বন্দ্ব এখনো কাটেনি। যার কারণে কক্ষ বরাদ্দ স্থগিত রাখা হয়েছে। ভবনটির চতুর্থ তলার দক্ষিণ ব্লকে প্রায় ৪০টি কক্ষ নিয়ে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের মধ্যে এ দ্বন্দ্ব। এখন আবার যুক্ত হয়েছে আরেক বিভাগ। নতুন করে ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগ কক্ষগুলো ব্যবহারের আবেদন জানিয়েছে ডিন কর্তৃপক্ষের কাছে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার ডিন জীববিজ্ঞান অনুষদের আওতাধীন বিভিন্ন বিভাগের সভাপতিদের সাথে বৈঠকে করেন। এতেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জানা যায়, অনুমতি পেয়ে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগ কক্ষগুলোতে সরঞ্জাম ও নামফলক লাগালে খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ কক্ষগুলো নিজেদের দাবি করে তার উপর আবার তালা লাগিয়ে দেয়। বিষয়টি নিয়ে কাটাকাটির ঘটনা ঘটে শিক্ষকদের মধ্যে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত হলে দ্বন্দ্বে না জড়িয়ে সুষ্ঠু অবস্থানে থাকার নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই বসে সমাধানেরও আশ্বাস দেয়া হয়। এ বিষয়ে অনুষদের ডিনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করেন চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।
জানা যায়, ভবনটি নির্মাণের জীববিজ্ঞান অনুষদ ভবনটি পাঁচতলার। চতুর্থ তলায় এ বিভাগ ভাগাভাগি করে শ্রেণি কার্যক্রমসহ যাবতীয় কাজ করে থাকে। উত্তর পাশে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অবস্থান। দক্ষিণ পাশে কাজ চলছিল। কাজ প্রায় শেষের দিকে হওয়ায় কক্ষগুলো ব্যবহারের জন্য অনুষদের ডিনের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। তার প্রেক্ষিতে গত মাসে কর্তৃপক্ষ দক্ষিণ সাইডের কক্ষগুলো ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর নেমপ্লেট ও তালা লাগায় জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। এ খবর পেয়ে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ কক্ষগুলো তাদের দাবি করে পাল্টা তালা লাগিয়ে দেন। এতে ক্ষুব্ধ হন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষকরা। এর প্রতিবাদে অনুষদের সামনে অবস্থান করেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রা প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসানের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের আশ্বাসে সরে যান তাঁরা।
এ ব্যাপারে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি ড. নাজনীন নাহার ইসলাম বলেন, বিভাগ প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর্যন্ত আমাদের কক্ষ ধার করে কার্যক্রম চালাতে হয়েছে। আমাদের দীর্ঘদিন ধরে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে নতুন কক্ষ দেওয়ার। প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে আমরা অবশ্যই এই কক্ষগুলোর ন্যায্য দাবিদার এবং প্রশাসন তা উপলব্ধি করেই আমাদের বরাদ্দ দিয়েছিলেন। বরাদ্দের চিঠি পাওয়ার পর নিয়ম মেনে কক্ষে অবস্থান নিয়েছি। কিন্তু বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগ জোর করে আমাদের ২০ কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
অপরদিকে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. আতিয়ার রহমান বলেন, ভবনটি যখন নকশা করা হয়েছে তখন স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে দক্ষিণ সাইডের এ কক্ষগুলো আমাদের বিভাগের। এ ব্যাপারে প্রমাণাদি আমাদের কাছে রয়েছে। এখানে অন্তত ৪০টি কক্ষ রয়েছে। এক্ষেত্রে আমরা এখন যে কক্ষ ব্যবহার করছি, সেগুলো ছেড়ে দেব। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ভুল প্রক্রিয়ায় কক্ষগুলো বরাদ্দ নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। গত বৃহস্পতিবারও এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
এ ব্যাপারে অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. কামরুল হোসাইন গতকাল শুক্রবার রাতে আজাদীকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার এ নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। এতে কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর কোনো বিভাগকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এখন ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগও আবেদন জানিয়েছে। সব বিভাগ কিন্তু আগের নকশা অনুসারে অবস্থান করছে না। এ ব্যাপারে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাপুলের রায় পর্যালোচনায় সংসদ
পরবর্তী নিবন্ধকাল করোনার টিকাদান বন্ধ থাকছে