তিন দিনের ছুটিতে দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে দেশী-বিদেশী পর্যটকের ঢল নেমেছে। এদিকে পর্যটকরা কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। আজ শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এবং আগামীকাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির কর্মহীন সময়ের ফাঁকে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ছুটি কাটাতে পরিবার ও নিকটজনদের নিয়ে পর্যটকরা ছুটে এসেছেন টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপে।
রাত্রিকালীন সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করতে নদী-সাগর পাড়ি দিয়ে হাজারো পর্যটক এখন সেন্টমার্টিনে অবস্থান করছেন। ইতিমধ্যে দ্বীপের শতাধিক আবাসিক হোটেল এবং কটেজসমূহ পর্যটকে ভরে গেছে।
হোটেল মালিকরা জানান, লকডাউন পরবর্তী সময়ে ছুটির সুযোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের ফাঁকে আগে থেকেই ৯০% পর্যটক সেন্টমার্টিনের হোটেল এবং কটেজে বুকিং দিয়েছেন।
এমনকি হোটেল-কটেজ পরিপূর্ণ হলে হাজারো পর্যটক সৈকতের বালিয়াড়িতে রাত কাটাবেন বলে জানা গেছে। অনেকেই আবার সেন্টমার্টিনে রুম না পেয়ে ঘর ভাড়া করে নিয়েছেন বলে জানা যায়।
ঢাকা মিরপুর থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক নাফিস ইকবাল বলেন, “সেন্টমার্টিন দ্বীপে এসে রাতযাপন করার শখ ছিল দীর্ঘ দিনের। আনন্দ উদযাপন করতে পরিবার নিয়ে প্রবাল দ্বীপে ছুটে এসেছি।”
সেন্টমার্টিন হোটেল কটেজ মালিক সমিতি ও দ্বীপ আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান জানান, তিন দিনের টানা ছুটিতে পর্যটকে ভরে গেছে সেন্ট মার্টিন। পর্যটকরা প্রতি বছর এ সময়ে সেন্টমার্টিনে আসেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দ্বীপের হোটেল-কটেজ মালিক সমিতি সব সময়ই পর্যটকদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানে বদ্ধপরিকর।”
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান, তিন দিনের ছুটিতে ৭/৮ হাজারেরও বেশি পর্যটক দ্বীপে এসেছেন। অনেক পর্যটক হোটেল-কটেজে জায়গা না পেয়ে ইতিমধ্যে তাঁবু, প্যান্ডেল ভাড়া নিয়েছেন। তারা নিকটজনদের নিয়ে সৈকতের বালিয়াড়িতে রাত কাটাবেন। সন্ধ্যার পর থেকে থেকে প্যান্ডেল নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিশেষ করে লকডাউন পরবর্তী পর্যটন মৌসুম এবং সরকারি ছুটিকে স্মৃতিময় করতে এসব পর্যটক আগামী শনিবার পর্যন্ত প্রবাল দ্বীপে অবস্থান করবেন তবে পুলিশ, কোস্টগার্ড, বিজিবি সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করছে।
সেন্ট মার্টিন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পুলিশ পরিদর্শক মো. মুস্তাকিম হোসাইন জানান, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে পুলিশ কাজ করছে। পর্যটকরা যেন অবাধে চলতে পারেন সেই জন্য তিন স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পর্যটকদের স্বার্থে সৈকতে মোটরসাইকেল চালানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এদিকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, ছুটির দিন হওয়াতে সেন্টমার্টিনে পর্যটকরা যাতে নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা এবং রাতযাপন করতে পারেন সেজন্য স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।