চট্টগ্রাম টেস্টে হারলেও প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ফলো অনের শংকায় ফেলে দিয়েছিল। এবার ঢাকা টেস্টে নিজেরাই এখন ফলোঅনের শংকায় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বহীন ব্যাটিং বাংলাদেশকে ঠেলে দিয়েছে ফলোঅনের শংকায়। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩০০ রানে বেধে ফেলার পরিকল্পনা সফল হয়নি টাইগারদের। একই সাথে যে স্পিন ফাঁদ পেতেছিল স্বাগতিকরা সেটাও কাজে আসেনি। উল্টো ক্যারিবীয়দের স্পিনে হাবুডুবু খাচ্ছে টাইগাররা। বাংলাদেশের নখদন্তহীন স্পিন আক্রমণ মিরপুরের ব্যাটিং উইকেটে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের কোনো পরীক্ষাই নিতে পারেনি। টেস্টের দ্বিতীয় দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৪০৯ রান সংগ্রহ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জবাবে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০৫ রান তুলে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের চেয়ে এখনও ৩০৪ রানে পিছিয়ে মোমিনুলরা। যেখানে ফলোঅন এড়াতে এখনো ১০৫ রান করতে হবে স্বাগতিকদের।
ম্যাচের প্রথম দিনে কিছুটা নড়বড়ে ব্যাটিং করলেও দ্বিতীয় দিনে দারুণ দৃঢ়তা দেখিয়েছে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা। দিনের প্রথম সেশনেই তুলে নেয় ১০২ রান। উইকেট হারিয়েছে মাত্র একটি। এরপর বলতে গেলে বাংলাদেশের বোলারদের কড়া হাতে শাসন করেছেন জসোয়া ডি সিলভা এবং পেস বোলার হিসেবে খেলতে নামা আলজারি জোসেফ। যদিও দিনের প্রথম সেশনেই বোনারের সঙ্গে ৮৮ রানের জুটি গড়েছিলেন জশুয়া ডি সিলভা। পরে আলঝারি জোসেপকে নিয়েও ১১৮ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে তোলেন তিনি। তবে তাইজুলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে জশুয়া ডি সিলভাও সেঞ্চুরি করতে পারেননি। ফিরেছেন ৯২ রান করে। অপরদিকে জোসেফও থামেন সেঞ্চুরি থেকে ১৮ রান দূরে থাকতে। তবে শেষ দিকের ব্যাটসম্যনাদের দৃঢ়তায় ৪০০ পার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাদের ইনিংস। বল হাতে ৪ উইকেট করে তুলে নিয়েছেন পেসার আবু জায়েদ রাহি ও স্পিনার তাইজুল ইসলাম। এই টেস্টেও ব্যর্থ হলেন নাঈম হাসান। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও সৌম্য সরকার। দিনের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অল আউট করার আশা পূরণ না হওয়ায় দিনের শেষ বেলায় ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। আর শুরুতেই ধাক্কা। স্কোর বোর্ডে ১ রান যোগ হতেই ফিরেন সুযোগ পাওয়া ওপেনার সৌম্য সরকার। রানের খাতা খোলা হয়নি তার। শুরুতেই ধাক্কা দেওয়া গ্যাব্রিয়েল তৃতীয় ওভারে আবার আঘাত হানলেন। এবার তার শিকার নাজমুল হোসেন শান্ত। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন তামিম ইকবাল ও মোমিনুল হক। ভালই এগিয়ে যাচ্ছিলেন দুজন। কিন্তু ৫৮ রানের জুটিটাকে আর বড় করতে পারলেন না দলের দুই সেরা ব্যাটসম্যান। রাকিম কর্নওয়ালের লাফিয়ে উঠা বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিলেন মোমিনুল। টাইগার দলপতি থামেন ২১ রান করে। চট্টগ্রাম টেস্টের দুই ইনিংসেই ব্যর্থ তামিম, পারলেন না এই টেস্টেও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে। ফিরলেন ৪৪ রান করে। মোমিনুল ফেরার পরের ওভারেই জোসেফের বলে মোসলের হাতে ক্যাচ দিলেন তামিম। ৫২ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৪৪ রান করেন টাইগার ওয়ানডে অধিনায়ক। ৭১ রানেই ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ভরসা হয়ে আছেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। এ দুজন দিনের বাকি সময়টা পার করে আসেন কোনমতে। ২৭ রানে অপরাজিত আছেন মুশফিক। আর ৬ রানে আবার ব্যাট করতে নামবেন মিঠুন। আজ ফলো অন এড়াতে পারে কিনা সেটাই এখন বড় লক্ষ্য বাংলাদেশের।