তৎকালীন মুসলিম লীগের অন্তঃকলহ ও ভগ্নদশা এবং প্রদেশব্যাপী অভাব ও আকালের পরিপ্রেক্ষিতে উৎসাহের সঙ্গে নতুন রাজনৈতিক দল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পরিবর্ধনের কাজ চলছিল। দলমত নির্বিশেষে সকলকেই আওয়ামী লীগে যোগদানের ডাক দেয়া হচ্ছিল। প্রধানত সভাপতি মওলানা ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক প্রদেশের সবখানে ঘুরে সভা করছিলেন, আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করার জন্য। স্থানীয় কমিটিসমূহ গঠিত হচ্ছিল। মুসলিম লীগের নেতা ও কর্মীরা আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছিল। কারণ সামনে ছিল প্রদেশের সাধারণ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি।
মুসলিম লীগ সরকারের এই সময়ে দেশের বিশেষ করে পূর্ব বাংলার অবস্থা কী ছিল তা অনুমান করা যায় ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশের মানুষের ক্রোধে ফেটে পড়া দেখেই। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ সরকার দেশে ও দেশের বাইরে প্রচণ্ড চাপ সামলাতে ব্যস্ত ছিল। পাকিস্তান সরকার এই সময় পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্তের সঙ্গেও নিজেদের জড়িত করে ফেলে। বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোতে চলছিল ব্রিটিশ-সাম্রাজ্যবাদের চূড়ান্ত হামলা ও নিষ্পেষণ। পাকিস্তান সরকার সাম্রাজ্যবাদীদের সমর্থন করে যেমন একদিকে মুসলিম জাহানের কাছেও মুখ দেখাবার পথ রাখেনি তেমনি দেশে এই নীতির বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দাবাদ ধ্বনিত হচ্ছিল।