চট্টগ্রামে প্রতীক্ষার টিকা

মহানগরসহ জেলায় কার্যক্রম শুরু হচ্ছে আজ।। প্রথম দিন টার্গেট সম্মুখ সারির ১শ জন।। প্রথম নেবেন নওফেল

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:৪০ পূর্বাহ্ণ

করোনার টিকা নিয়ে বহুল প্রতীক্ষার অবসান হচ্ছে চট্টগ্রামে। আজ রোববার মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় শুরু হচ্ছে আনুষ্ঠানিক করোনার টিকাদান কার্যক্রম। মহানগরে টিকাদানে ১৫টি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হলেও শুরুতে কেবল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে টিকা দেয়া হবে।
আজ সকাল ১০টায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীল কয়েকজন কর্মকর্তার টিকা গ্রহণের মধ্য দিয়ে চমেক হাসপাতাল কেন্দ্রে টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন হবে। টিকাদানে হাসপাতালের চার তলায় (আইসিইউর পাশে) চারটি বুথ প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি বুথে পুরুষ এবং দুটি বুথে মহিলাদের টিকা দেয়া হবে। টিকাদানে এরই মধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর। প্রথম দিন অনলাইনে নিবন্ধনকৃত একশজনকে টিকা প্রদানের টার্গেট রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সকাল ১০টায় উদ্বোধনের পর দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টিকাদান চলবে। অনলাইনে নিবন্ধনকৃতরাই টিকা নিতে পারবেন। শনিবার পর্যন্ত নিবন্ধনকৃত প্রায় দেড়শ জনের ফরম আমাদের কাছে জমা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দিন একশজনের মতো নিবন্ধনকৃত সম্মুখ সারির যোদ্ধাকে টিকা দেয়ার টার্গেট রয়েছে আমাদের। তবে এর বেশি হলেও আমরা চালিয়ে নিয়ে যাব। অন্য সময়ে প্রতিদিন বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকাদান কার্যক্রম চালু থাকবে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ও চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী জানান, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর নওফেলের পর বীর মুক্তিযোদ্ধা, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত অন্যদের মধ্য থেকে নিবন্ধনকৃতদের টিকা দেয়া হবে।
চমেক হাসপাতাল প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে চারটি বুথ এরই মধ্যে প্রস্তুত। টিকাদানে নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে ১০টি টিম। এসব টিমের প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও সম্পন্ন হয়েছে। টিকাদানের পর টিকাগ্রহণকারীকে আধ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এজন্য টিকা গ্রহণ পরবর্তী অপেক্ষাগারও প্রস্তুত করা হয়েছে। কোনো ধরনের জটিলতা বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তা দেখার জন্য মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। টিকা গ্রহণকারীদের জন্য থাকছে সুপেয় পানির ব্যবস্থাও।
এদিকে, চমেক হাসপাতালে উদ্বোধনের পরপর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালেও টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এ কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন। তবে হাতেগোনা কিছু সংখ্যক নিবন্ধনধারীকে প্রথম দিন টিকা দেয়া হবে এই কেন্দ্রে।
টিকাদান কার্যক্রম উদ্বোধনে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে গতকাল দুপুরে চমেক হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবীর, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, চসিক করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির সদস্য সচিব ও চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বিসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। টিকাদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে শুরু ও পরিচালনা সংক্রান্ত বিশদ আলোচনা হয় বৈঠকে।
উপজেলা পর্যায়েও আজ শুরু : মহানগরের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে করোনার টিকাদান আজ শুরু হচ্ছে। এরই মধ্যে শুক্রবার বরাদ্দকৃত ৩ লক্ষাধিক ডোজ টিকা ১৪ উপজেলায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে জানিয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙগুলোও মোটামুটি প্রস্তুত। টিকাদানে উপজেলার প্রতি কেন্দ্রে ৬ সদস্যের ২টি করে টিম নিয়োজিত থাকবে। এসব টিমের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএকটি ঘটনায় পাল্টে যায় অনেক কিছু
পরবর্তী নিবন্ধপটিয়ায় ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাইয়ের লড়াই