রেলমন্ত্রী এড. নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, অতীতে রেল ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। রেলের প্রতি কোনোরকম দৃষ্টি দেয়া হয়নি। বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১১ সালে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে রেল মন্ত্রণালয় গঠন করে রেলের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের দ্বারা সুচনা করেছেন।
তিনি বলেন, “প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আমরা রেল এবং সড়ক উভয় দিক থেকে যাতে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারি তার জন্য ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা অর্থাৎ বাংলাদেশ, ভারত, চীন এবং মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। একইভাবে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরের সাথেও রেল যোগাযোগ স্থাপন হবে।”
তিনি আজ শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম-দোহাজারী-চট্টগ্রাম রুটে ডেমু ট্রেন দ্বারা নতুন কমিউটার ট্রেনের উদ্বোধন উপলক্ষে চন্দনাইশের দোহাজারী রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, “মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে রেলের অবকাঠামোগত যে সামর্থ রয়েছে সেদিকে লক্ষ্য রেখে বর্তমানে রেলকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “প্রত্যেকটি জেলায় জেলায় আমরা রেল সম্প্রসারিত করব। সেভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ১০টি অগ্রাধিকার প্রকল্পের মধ্যে ২টি রেলওয়ের। তার মধ্যে একটি হলো দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন সম্প্রসারণ এবং অপরটি হচ্ছে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু দিয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেল লাইন সম্প্রসারণ। আগামী ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনের কাজ সম্পন্ন করে জনগণের জন্য রেল যোগাযোগ উম্মুক্ত করা হবে।”
তিনি আরো বলেন, “বর্তমান সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় যে মুলনীতিগুলো গ্রহণ করেছে তার লক্ষ্য হলো মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে গড়ে তোলা। জাতির জনকের স্বপ্ন সোনার বাংলা, ক্ষুদামুক্ত, দারিদ্রমুক্ত একটি দেশ প্রতিষ্ঠা করা। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের প্রত্যেকটা সেক্টরে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছেন। ১০০টি অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা হচ্ছে। যেখানে বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন হয়েছে। যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ।”
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোসলেম উদ্দীন আহমদ এমপি, চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী, পূর্বাঞ্চলের সহকারী চীফ অপারেটিং সুপারিনটেন্ডেন্ট মো. সাহেব উদ্দিন, পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা স্নেহাশীষ দাশগুপ্ত। হাবিবুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমতিয়াজ হোসেন, চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, আলমগীরুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা আওয়ালীগের সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ চৌধুরী জুনু, দক্ষিণ জেলা আওয়ালীগ নেতা বোরহান মো. এমরান, আওয়ামীলীগ নেতা এম. বাবর আলী ইনু, হেলাল উদ্দীন চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বেগ, আবদুশ শুক্কুর, বশির উদ্দীন মুরাদ, কৃষকলীগ নেতা নবাব আলী প্রমুখ।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, আগামীকাল ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ডেমু রেকের মাধ্যমে নিয়মিতভাবে এ লাইনে ট্রেনটি চলাচল করবে। দোহাজারী কমিউটার-১ চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভোর সাড়ে ৫টায় রওনা হয়ে সকাল ৬.৪০টায় পটিয়া স্টেশনে পৌঁছবে।
দোহাজারী কমিউটার-২ পটিয়া থেকে সাড়ে ৭টায় রওনা হয়ে সকাল ৯টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছবে।
দোহাজারী কমিউটার-৩ চট্টগ্রাম থেকে বিকাল ৫টায় রওনা হয়ে রাত সাড়ে ৭টায় দোহাজারীতে পৌঁছবে।
দোহাজারী কমিউটার-৪ দোহাজারী স্টেশন থেকে রাত ৭টা ৪০ মিনিটে রওনা হয়ে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছবে। যাত্রাপথে এ রেল-লাইনের কাঞ্চননগর, পটিয়া, ধলঘাট, গোমদন্ডি, জানালীহাট, ষোলশহরসহ সবগুলো স্টেশনে যাত্রী উঠানামা করবে।