রংমহলে অভিযান : দুইজনকে কারাদণ্ড সাতটি ড্রেজার ও দু’টি ডাম্পার জব্দ

ক্ষতিপূরণসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলার নির্দেশ

চকরিয়া প্রতিনিধি | শুক্রবার , ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রংমহলে গত দুইমাস ধরে চলে আসা পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড বন্ধে অবশেষে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় মূলহোতারা পালিয়ে যায়। দুইজন শ্রমিককে আটক করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা হয়েছে অবৈধভাবে উত্তোলিত বালু পরিবহনে ব্যবহৃত দুটি ডাম্পার গাড়ি। পুড়িয়ে এবং ভেঙে নষ্ট করা হয়েছে ভূ-গর্ভ থেকে বালু তুলতে বিভিন্নস্থানে বসানো সাতটি শক্তিশালী ড্রেজার (শ্যালোমেশিন) এবং কয়েকশ’ ফুট পাইপ। ঘটনাস্থল থেকে হাতেনাতে আটক সাইদুল ইসলাম (২৪) ও মো. আলমগীর (৩০) কে একমাস করে কারাদণ্ড দিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা থেকে দুইটা পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তানভীর হোসেন। এদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর আবারো মাটি কেটে পাচার শুরু করেছে সংশ্লিষ্টরা। স্থানীয়রা জানান, বগাইছড়ি ছড়াখালে মাটি ফেলে নির্মিত রাস্তাটি অপসারণ না হওয়ায় মাটি পরিবহন অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও চকরিয়ার এসি ল্যান্ড মো. তানভীর হোসেন বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানের সময় যাকে স্পটে পাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। এর বাইরে অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে পরিবেশ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করবে। এর পর উদ্যোগ নেওয়া হবে ছড়া খালে দেওয়া মাটির বাঁধ অপসারণের।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘ডুলাহাজারার রংমহলে পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চলতে দেওয়া হবে না। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের পর আবারো অপতৎপরতা শুরু করলে এবার কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরকে বলা হয়েছে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে।’
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘ডুলাহাজারার রংমহলে যারা পরিবেশ বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে তাদেরকে শনাক্ত করে ক্ষতিপূরণসহ পরিবেশ আইনে মামলা রুজু করতে কঙবাজারে দায়িত্বরতদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত বুধবার দৈনিক আজাদীর প্রথম পাতায় ‘মুছে যাচ্ছে রংমহলের রং’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় ডুলাহাজারার রংমহলের দাঙ্গার বিলের টিলা শ্রেণীর পাহাড় সাবাড় ও সমতল জমির মাটি এঙেভেটর দিয়ে কেটে অন্যত্র পাচার এবং শক্তিশালী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ভূ-গর্ভ থেকে বালু তুলে ফেলার কর্মকাণ্ড। প্রকাশিত খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এতে টনক নড়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের। এর পর গতকাল ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকরোনায় দেশে আরও ১৩ জনের মৃত্যু শনাক্ত ৪৮৫
পরবর্তী নিবন্ধবিশ্বে করোনাভাইরাসের চার হাজার ধরন, তৈরি হচ্ছে টিকার মিশ্র ডোজ