বান্দরবানে পাহাড়ে চাষ করা জুমের হরেক রকমের ফসল ঘরে তোলার আনন্দে ‘চাথা চানা পই’ (নবান্ন) উৎসবে মেতেছে খুমী জনগোষ্ঠী। রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের সাংকিং পাড়ায় এ উৎসবের আয়োজন করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট (কেএসআই)। পাহাড়ী গ্রামগুলোতে নবান্ন উৎসব চলবে আরও সপ্তাহখানেক। গত রোববার উৎসবের শুরুতে একটি মঙ্গল শোভাযাত্র বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে পাহাড়ের একটি জুমে আয়োজন করা হয় নবান্ন উৎসবের। উৎসবে বিভিন্ন রকমের জুম ধান, জুমে উৎপাদিত ফলমূল, সরঞ্জামাদি ও বিনি চালের পিঠা প্রদর্শন করা হয়। জুম চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণনা দেন পাড়ার বয়োজ্যেষ্ঠরা।
জুমের ফসল ঘরে তোলার আনন্দকে দ্বিগুণ করতে আয়োজিত নবান্ন উৎসবে তারাছা ইউনিয়নের আশপাশের কয়েকটি খুমী পাড়ার বাসিন্দা অংশ নেয়। পাহাড়ী খুমী জনগোষ্ঠী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী এবং শিশু-কিশোররা নিজস্ব জাতি গোষ্ঠীর পোশাক, গহনা পরে নাচে-গানে উৎসব মাতিয়ে তোলেন। খুমী শিল্পীরা নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি নৃত্য ও গানের মাধ্যমে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লেখক সিংঅং খুমী। অন্যদের মধ্যে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক মংনুচিং মারমা, শিক্ষক ও গবেষক শামুসদ্দিন শিশির, উন্নয়ন সংস্থা কথোয়াই এর নির্বাহী পরিচালক গাব্রিয়েল ত্রিপুরা, সাংকিং পাড়ার কারবারী নাংঅং খুমী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সিংঅং খুমী বলেন, জুমের ধান কাটার শেষে পাহাড়ে জুম ক্ষেতে উৎপাদিত নতুন ফলমূল ও বিনি চাল দিয়ে নবান্ন উৎসব পালন করে খুমীরা। উৎসবে পাড়ার ছেলে-মেয়ে ও বয়োবৃদ্ধ সবাই এক সঙ্গে আনন্দ উৎসবে অংশ নেয়। উৎপাদিত ফলমূল পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিউিটের পরিচালক মংনুচিং মারমা বলেন, পাহাড়ে জুমের ফসল তোলার পর কয়েকটি জনগোষ্ঠী জুম চাষের জীবন নিয়ে উৎসব পালন করে। স্ব-জাতীয় গোষ্ঠীরা এই উৎসবকে ভিন্ন ভিন্ন নামে পালন করে থাকে। তবে সামগ্রিকভাবে নবান্ন উৎসব নামে পরিচিতি।