চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে গত দুই যুগেরও বেশি সময়ে গতকালই প্রথম প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো। সিটি কর্পোরেশনের ভোটের দিন রক্তাক্ত হলো চট্টগ্রাম নগরী। এবারের নির্বাচনী প্রচারকালে তিনজনের প্রাণহানির ঘটনায় ব্যাপক সংঘাতের আশংকা করা হয়। এতে শুরু থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশাসন। এরপরও নির্বাচনী সংঘর্ষে দুইজনের প্রাণহানি ঘটেছে। চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন থেকে সিটি করপোরেশনে রূপান্তরিত হয় ১৯৯০ সালে। আইনের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশন হলেও প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৪ সালে। তখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হন। ২০০০ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। ওই দুইটি নির্বাচনে শহরের কোথাও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। ২০০৫ সালে বিএনপি প্রার্থী মীর মোহাম্মদ নাছিরউদ্দিনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আবার জয় পান মহিউদ্দিন চৌধুরী। ২০০৫ সালে রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল বিএনপি। ওই নির্বাচনে ভোটের আগের দিন এক শ্রমিকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল।
২০১০ ও ২০১৫ সালে দুটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই দুই নির্বাচনেও নগরীতে কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। সেই হিসেবে ১৯৯৪ সালের পর সিটি নির্বাচনে গতকালই প্রথম ভোটের দিন প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো।
১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ইউসেফ আমবাগান স্কুল কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও বিদ্রোহী প্রার্থী মাহমুদ উল্লাহর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হয়। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আধিপত্য বিস্তারে সংঘটিত এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। মোহাম্মদ আলাউদ্দিনকে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী মাহমুদুর রহমান নিজের কর্মী বলে দাবি করেছেন।
অপরদিকে সরাইপাড়া কেন্দ্রেও আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে নিজামউদ্দিন মুন্না ছুরিকাঘাতে নিহত হন। মুন্নাকে ছুরিকাঘাতের জন্য তার ভাইকে দায়ী করা হয়েছে। মুন্নাকে নিজের কর্মী বলে দাবি করেছেন বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী সাবের আহমেদ।
দুইজনের প্রাণহানির ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২৭ বছরে প্রথম রক্তাক্ত হলো নগরী।