চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে আনতে ‘আওয়ামী লীগের অস্ত্র’ মোকাবেলা করে এগিয়ে যেতে দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, যারা সন্ত্রাসী ও মাস্তানি করছে তাদেরও তো সীমাবদ্ধতা আছে। অস্ত্র নিয়ে বের হওয়া তাদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। আওয়ামী লীগের অস্ত্র আমরা বহুবার মোকাবেলা করেছি। জনগণকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলে সাফল্য অবশ্যই আসবে।
চসিক নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীমের সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় সভায় অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, ড. সুকোমল বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মশিউর রহমান বিপ্লব। বক্তব্য দেন, মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। চসিক নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর প্রধান সমন্বয়কারী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরো বলেন, জনগণের ভোট কেড়ে নিয়ে যারা ক্ষমতা বসে আছে তাদের পরাজিত করতে হবে। এজন্য সমন্বিতভাবে, হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। ২৭ জানুয়ারি ফলাফল হাতে পাওয়া পর্যন্ত সবাইকে ঐক্যদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেন, মহানগরীতে বিএনপি অত্যন্ত শক্তিশালী। কাজেই আমাদের জনসমর্থন, মনোবল এবং কর্মীদের যে ত্যাগ তাতে ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ আমাদের পরাজিত করতে পারবে না। দুর্বত্তায়নের রাজনীতি চলবে। এখান থেকে আওয়ামী লীগ বের হতে পারবে না। এটা নিয়ে আমাদের চিন্তা করার দরকার নেই। আমাদের ফোকাস থাকবে জনগণ। নির্বাচনী কার্যক্রমের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন তারা নিবেদিতভাবে দায়িত্ব পালন করুন।
আমীর খসরু আরো বলেন, জনগণের উপর আওয়ামী লীগের আস্থা নেই বলেই চসিক নির্বাচনে বিএনপির প্রচারণায় বিভিন্নভাবে বাধা দিচ্ছে। মূলত আওয়ামী লীগ কোন রাজনৈতিক দল নয়। তারা জনগণ থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছে। তাদের চরিত্র আগেও খারাপ ছিলো এখন আরো খারাপের দিকে গেছে। সন্ত্রাস, ভয়ভীতি, অস্ত্রবাজি আওয়ামী লীগের দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। জনগণ থেকে বিছিন্ন বলেই তারা সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে চট্টগ্রামে প্রকৃত অর্থে যেসব নির্বাচন হয়েছে প্রায়ই সব নির্বাচনে বিএনপি জিতেছে। তিনি বলেন, দেশের জনগণ এখনও গুমরে কাঁদছে, তাদের আবেগ-প্রত্যাশা ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য, ধানের শীষে একটি ভোট দেওয়ার জন্য ও সরকারের পতনের জন্য। আগামী ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ ভোটের মাধ্যমে তাদের এই প্রত্যাশা পূরণ করবে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে একটি প্রজেক্ট হিসেবে নিয়েছে। এই প্রজেক্টের মাধ্যমে তারা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করছে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে বাধা দিচ্ছে। চট্টগ্রামের বিএনপি আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। আমাদের নেতাকর্মীরাও আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। ডা. শাহাদাত হোসেন অনেক জনপ্রিয় প্রার্থী। তিনি দীর্ঘদিন রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন। নেতা-কর্মীদের সুখে দুঃখে ছিলেন। তাকে বিজয়ের জন্য এ নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে।
মেয়র প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা একটি সুন্দর নির্বাচন চাই, একটি সুন্দর শহর চাই, একটি স্মার্ট সিটি চাই। এমন একটি নির্বাচন হবে যাতে জনগণ নির্ভয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে। চট্টগ্রাম আজ সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। বার বার অভিযোগ দেয়ার পরও কোন প্রতিকার হচ্ছে না। বরং দিন দিন অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা এম এ আজিজ, একরামুল করিম, এরশাদ উল্লাহ, মোস্তাক আহমদ খান, মো. মিয়া ভোলা, অ্যাড. আব্দুস সাত্তার, সৈয়দ আজম উদ্দিন, চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দীন, এম এ হালিম, ইফতেখার উদ্দীন চৌধুরী মহসিন, অধ্যাপক ইউনুছ চৌধুরী, এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, নাজিমুর রহমান, শফিুকুর রহমান স্বপন, নুরুল আমিন, কাজী বেলাল উদ্দিন, জসিম উদ্দীন সিকদার, কর্নেল (অব.)আজিম উল্লাহ বাহার, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইসকান্দার মির্জা, আব্দুল মান্নান।