চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের নির্বাচনী প্রচারণা ঘিরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে ১০/১১ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার বিকালে নগরীর লালখান বাজার বটতল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম ও কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলালের অনুসারীদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। সংঘর্ষের খবর পেয়ে মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম ওই এলাকায় আর গণসংযোগে যাননি।
সংঘর্ষে আহতদের ৬ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে তিনজন ২৪ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়িতে দায়িত্বরত নায়েক আমির হোসেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান তিনি। জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় লালখান বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিমের গণসংযোগের সময় নির্ধারিত ছিল। তবে নেতারা সেখানে পৌঁছার আগে দিদারুল আলম মাসুমের নেতৃত্বে একটি মিছিল লালখান বাজার থেকে বটতল এলাকায় পৌঁছতেই দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটের টুকরা নিক্ষেপ শুরু হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের ঘটনায় দিদারুল আলম মাসুম ও কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলাল একে অপরকে দোষারোপ করেছেন।
কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মো. বেলালের দাবি, দিদারুল আলম মাসুম কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় দেড় হাজার নেতাকর্মী নিয়ে আমি রেজাউল ভাইয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমার সঙ্গে নারী কর্মীরাও ছিল। দিদারুল আলম মাসুমের নেতৃত্বে একটি মিছিল ঢুকে পড়ে আমাদের ভেতরে। তারা হঠাৎ হামলা শুরু করে। হামলায় আমার চারজন কর্মী আহত হয়েছেন। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
সংঘর্ষের জন্য আবুল হাসনাত মো. বেলালকে দায়ী করে দিদারুল আলম মাসুম বলেন, আমরা মিছিল নিয়ে লালখানবাজার থেকে বটতল পৌঁছাতেই অতর্কিত হামলা চালায় বেলালের সমর্থকরা। হামলায় নৌকার সমর্থনে মিছিল করা আমাদের ৭ জন গুরুতর আহত হয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি খুলশী থানার ওসি শাহীনুজ্জামান। তবে মেয়র প্রার্থীর প্রচারণায় অংশগ্রহণ নিয়ে দুই পক্ষে হালকা সমস্যা হয়েছে জানিয়ে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) বিজয় কুমার বসাক বলেন, পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
প্রসঙ্গত, নগরীর ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে মনোনয়ন পেয়েছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবুল হাসনাত মো. বেলাল। এখানে সাবেক কাউন্সিলর এফ কবির মানিক বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে আছেন।
এর আগে গত ১২ মঙ্গলবার রাতে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠানটুলিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত ও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল কাদের গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন।