চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ঠেলা গাড়ি। এর আগের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রথমবার নির্বাচিত হয়েই উন্নয়নের ছোঁয়ায় অনেকটাই পাল্টে দিয়েছেন জামালখানকে। এবারের নির্বাচনে প্রত্যাশা আর বিগত নির্বাচনের প্রাপ্তি সম্পর্কে তিনি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আজাদীর কাছে।
আজাদী : গত মেয়াদে কাউন্সিলর হিসেবে নিজেকে কতোটা সফল মনে করেন ?
শৈবাল দাশ সুমন : দায়িত্ব গ্রহণের পর একের পর এক উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাল্টে দিয়েছি জামালখানকে। এলাকার মানুষই বলবে আমি কী করেছি, কতোটা করতে পেরেছি।
আজাদী : জামালখানের সৌন্দর্যবর্ধন ছাড়া আপনার আর কি কাজ ছিল ?
শৈবাল দাশ সুমন : নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত জামালখানের চেরাগীর নিচে এবং আশেপাশের এলাকা আর অন্ধকারে নয়, এখন আলোর পথ যাত্রী। চেরাগী সড়কসহ বিভিন্ন ডিভাইডারে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছি। এর পর একে একে জামালখান বাইলেন, ডিসি হিলের সামনে, জামালখান সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছি। ডা. এম এ হাসেম চত্ত্বরে দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারা করেছি। খাস্তগীর স্কুলের সীমানা প্রাচীরে টেরাকোটায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত পুরো ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। ‘বরেণ্য বাঙালি’ শিরোনামে সেন্ট মেরীস স্কুলের দেয়ালে করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুসহ ২০ জন শ্রেষ্ঠ বাঙালির ছবি ও বাণী সম্বলিত ম্যুরাল। চেরাগীর চূড়া সংস্কার করে দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। জামালখান ওয়ার্ডের আট স্থানে ফ্রি ওয়াইফাই জোন করা হয়েছে। স্কুল/কলেজ ছাত্রীরা যেন উত্যক্তের শিকার না হন এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে একডজন স্পটে ৩২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। কুসুমকুমারী স্কুলে ছাত্রীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রথম ফিঙ্গারিং পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। খাস্তগীর স্কুলের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে সিনিয়রস ক্লাবের মাঝ বরাবর ‘হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু’ নামে ২০ মিমি টেম্পার গ্লাসে খোদাই করা একটি ম্যুরাল করা হয়েছে। এছাড়াও জামালখান ওয়ার্ড জুড়ে পার্কিং টাইলস ও আধুনিক স্ট্রিট লাইট লাগানো হয়েছে। জামালখান মোড়ের এজি চার্চ স্কুলের সামনে থেকে পিডিবি অফিসার্স কোয়ার্টারের গেটের সামনে পর্যন্ত ফুটপাতটির সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে। এখানে করা হয়েছে লাইভ ফিশ এ্যাকুরিয়াম। কাজীর দেউড়ি মোড় থেকে লাভলেইন পর্যন্ত আইল্যান্ডে টাইলস ম্যুরালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ষড়ঋতুকে। একই ভাবে আইল্যান্ডে টাইলস ম্যুরালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে চট্টগ্রামের প্রকৃতিকে। যেগুলো ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছাড়াও চট্টগ্রামবাসীর কাছে বেশ সমাদৃত হয়েছে।
আজাদী : নির্বাচনে পুনরায় বিজয়ী হলে নতুন কী দেখবে এলাকাবাসী?
শৈবাল দাশ সুমন : গতবার মানুষ আমাকে না চিনে না বুঝে ভোট দিয়েছে। কিন্তু গত পাঁচ বছরে আমি মানুষের কাছে আমার প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরতে সাধ্য মতো চেষ্টা করে গেছি। আমি এলাকাবাসীর কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম জামালখানকে আমি নান্দনিক রূপ দেবো। যতোটা সম্ভব তা করেছি। আগামীতে সেন্ট মেরীস স্কুলের বিপরীত পাশের দেয়ালে টাইলস ম্যুরালে বঙ্গবন্ধুর কৈশোর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ইতিহাস ফুটিয়ে তোলা হবে। এছাড়া জামালখান ওয়ার্ডে ১৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মিত হবে। পাশাপাশি ডিজিটাল সাইনিংয়ে মনীষীদের বাণী প্রদর্শিত হবে। জামালখান মোড়ে একটি যাত্রীছাউনি করবো। যেখানে থাকবে ফ্রি বুকস্টল, কফিশপ, ২০ জন যাত্রীর বসার ব্যবস্থা। এলইডি টিভিতে দেশি চ্যানেল ও ভূ-প্রকৃতি বিষয়ক বিদেশি চ্যানেলগুলো প্রদর্শিত হবে। থাকবে দুটি টয়লেট। আসকারদীঘিকে একটি ওয়াটার পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার চিন্তা আছে। জামালখানের পিডিবি স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে একটি বার্ড জোন করা হবে। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন এবং পরিচ্ছন্নতা অভিযানতো চলবেই। আমি সাধারণ মানুষের সেবক হিসেবে কাজ করে যেতে চাই। অতীতেও করেছি, আগামীতেও করবো।