ওদের দুজনের বাড়ি ফেরা আর হলো না। সাতকানিয়ায় ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে স্কুলছাত্র জিসান। আর নতুন বই নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারল না প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জায়রিন। কুতুবদিয়ায় লবণ বোঝাই ট্রলির ধাক্কায় মারা যায় ৮ বছরের এই শিশুটি।
খেলার মাঠেই মৃত্যু : সাতকানিয়া প্রতিনিধি জানান, ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে রাতে বাড়ি ফেরা হলো না মো. সাজ্জাদুল ইসলাম জিসানের (১৪)। গত শনিবার রাত ১১টায় ব্যাডমিন্টন খেলা শেষে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে মাঠেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় জিসান। সাতকানিয়া উপজেলার কালিয়াইশ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড উত্তর কালিয়াইশ গ্রামে মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড চাগাচর পুকুর ভাঙা এলাকার মৃত মনছুর আলীর পরিবার শঙ্খের ভাঙনের শিকার হয়ে ভিটেবাড়ি হারিয়ে প্রায় ৮/৯ বছর পূর্বে সাতকানিয়ার কালিয়াইশ ইউনিয়নের উত্তর কালিয়াইশ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের পেছনের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। ঘটনার দিন শনিবার রাতে জিসান পাড়ার বন্ধুদের সাথে রাতে স্থানীয় মাঠে ব্যাডমিন্টন খেলতে যায়। খেলা শেষে রাত ১১টার দিকে ইলেকট্রিক লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছিল জিসান। কিন্তু সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয়। এ সময় মাঠে উপস্থিত বন্ধু ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিওসি মোড়ের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জিসান দোহাজারী জামিজুরী আহমদুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র।
ঘটনাস্থলে থাকা জিসানের বন্ধু রবিউল হোসেন জানান, বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য প্লাগ খুলতে গেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় জিসান।
৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. ইসমাইল বাবু জানান, গতকাল সকাল ৯টায় সাতকানিয়ার কালিয়াইশে প্রথম নামাজে জানাজা ও দুপুরে চন্দনাইশের দোহাজারী চাগাচর গ্রামে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বই নিয়ে হলো না ফেরা : কঙবাজার প্রতিনিধি জানান, কুতুবদিয়ায় লবণ বোঝাই ট্রলির ধাক্কায় জায়রিন সুবাহ (৮) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদের সামনের রাস্তায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত জায়রিন ইউনিয়নের পূর্ব চর ধুরুং এলাকার কায়সার আলমের মেয়ে ও ধুুরুং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা গার্লস কেজি স্কুলের ১ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী।
শিশুটি নতুন বই নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মর্মান্তিকভাবে নিহত হয় বলে জানান তার পিতা কায়সার। কায়সার উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। চাকরির সুবাদে পরিবার নিয়ে তিনি কার্যালয়ের বাসভবনে থাকেন।
কুতুবদিয়া হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার সাইমা তাবাচ্ছুম জানান, সকাল ১১টার দিকে জায়রিন নামের এক শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। মুখে ও মাথায় আঘাতের কারণে প্রচুর রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করেন তিনি।