প্রচারণার প্রথম দিনেই নির্বাচনী মাঠ সরগরম। গতকাল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু হলে ৭ মেয়র প্রার্থী ও ২৩৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী জুমার নামাজ শেষে নিজ নিজ এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশে গণসংযোগ শুরু করেন। গতকাল সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার হওয়ায় মূলত জুমার নামাজ শেষে কবরস্থানে মুরব্বি ও মাজার জেয়ারতের মাধ্যমে শুরু হয় চট্টগ্রামে ভোটের হাওয়া। প্রধান দুই মেয়র প্রার্থীসহ (আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন) অন্যান্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা জুমার নামাজ শেষে মাঠে নেমে পড়েন। অলিগলি ও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সাঁটানো হয়েছে পোস্টার-ব্যানার। গতকাল প্রথমদিনেই ব্যানারে ব্যানারে ছেয়ে গেছে নগরী। নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী দুপুর ২টা থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের নামে মাইকিং। প্রথমদিনে অনেকটা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে প্রচারণা শুরু হয়। কিন্তু চকবাজারে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ-সহিংসতায় শঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রথমদিন নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সমর্থক নিয়ে বিশাল শোডাউন করে প্রচারণা চালিয়েছেন প্রধান দুই দলের প্রার্থীসহ অনেকেই। মেয়রসহ কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা শুরু করলেও মূলত প্রধান দুই মেয়র প্রার্থী ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের গণসংযোগ স্থলগুলো ব্যাপক জনস্রোতে পরিণত হয়েছে। গত বছরের মার্চে মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পর করোনা মহামারীর কারণে স্থগিত হয়ে যায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। প্রায় ১০ মাস পর আগামী ২৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। করোনাকালে চার ওয়ার্ডে চারজন প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে ওই ওয়ার্ডগুলোতে নতুন তফসিল ঘোষণা করা হয়। পুরোনো প্রার্থীদের সঙ্গে নতুন করে ছয় প্রার্থী বেড়েছে। গতকাল প্রতীক পেয়ে মাঠে নেমেছেন তারাও।
গতকাল পুরোদমে ভোটের মাঠে নেমেছেন ৭ মেয়র ও ২৩৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী। প্রার্থীরা প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত একটানা প্রচারণা চালাতে পারবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান। প্রত্যেক ওয়ার্ডে একটি করে মাইক
বাজাতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান আজাদীকে জানান, প্রচার-প্রচারণায় আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সহকারী রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে তারা মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী : আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী গতকাল শুক্রবার নগরীর বহদ্দারহাটে বহদ্দার বাড়ি জামে মসজিদে জুমার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মা ও পূর্বপুরুষদের কবর জেয়ারতের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করেন। এসময় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক মেয়র, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ. জ. ম. নাছির উদ্দীন তাঁর সাথে ছিলেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ঃ এদিকে হযরত আমানত শাহ (র:) মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে গণসংযোগ শুরু করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন। গণসংযোগকালে তিনি নিজের ধানের শীষ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে হযরত আমানত শাহ (র:) মাজার সংলগ্ন মসজিদে আসেন ডা. শাহাদাত। জুমার নামাজ শেষে মাজার জিয়ারত করেন তিনি। বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের সাথে ছিলেন কেন্দ্র ও নগর বিএনপি’র সিনিয়র নেতারা।
এদিকে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডেও গতকাল সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা গণসংযোগ শুরু করেছেন।