এটিএম কার্ড কেড়ে নিয়ে তুলে নেয়া হলো টাকাও

অস্ত্রের মুখে সব নিল

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৯ জানুয়ারি, ২০২১ at ৫:০৫ পূর্বাহ্ণ

অস্ত্রের মুখে এক ব্যাংক কর্মকর্তাসহ তিন ব্যক্তির সর্বস্ব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ের বারইয়ারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড বারইয়ারহাট শাখার কর্মকর্তা আবদুল মোমিন, একই ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে সর্বস্ব ছিনতাই হয়। একই সময় সবকিছু কেড়ে নেওয়ার পর আবদুল মোমিনকে অস্ত্রের মুখে মাইক্রোবাসে বসিয়ে রেখে তার এটিএম কার্ড ব্যবহার করে ওখানকার শাহ্‌জালাল ইসলামী ব্যাংকের একটি বুথ থেকে ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেয় ছিনতাইকারীরা।
ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে আবদুল মোমিন, মিজানুর রহমানসহ অন্য এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি চট্টগ্রাম শহরে আসার উদ্দেশে বারইয়ারহাট থেকে একটি মাইক্রোতে উঠেন। ওই গাড়িতে আগে থেকেই যাত্রীবেশী চার ছিনতাইকারী ছিলেন।
গাড়ি মীরসরাই আসলে মাইক্রোর ভেতরে থাকা যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্র ধরে তিন যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল, মানি ব্যাগ, নগদ টাকাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। এসময় তিন যাত্রীকে কিল ঘুষি মারেন ছিনতাইকারীরা। এরপর অজ্ঞাতনামা ওই ব্যক্তিকে রাস্তার ধারে ফেলে দেয়। পরে আবদুল মোমিনকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া তার এটিএম কার্ডের পাসওয়ার্ড দিতে বাধ্য করে। তখন চালকসহ তিন ছিনতাইকারী মাইক্রোতে বসে ছিল এবং অপর ছিনতাইকারী ওই এটিএম কার্ড ব্যবহার করে মীরসরাই সদর এলাকার শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের একটি এটিএম বুথ থেকে ৪০ হাজার টাকা তুলে নেয়। এরপর তাদের দুই জনের চোখে মলম লাগিয়ে ছড়ারকুল এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে দেয়।
ছিনতাইয়ের শিকার ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, আমরা দুইজন চট্টগ্রাম শহরে আসার জন্য বারইয়ারহাট থেকে একটি মাইক্রোবাসে উঠি। আমাদের ছড়ার কুল ফেলে দেওয়ার পর চোখে কিছু দেখছিলাম না। অন্ধকারে হাতড়িয়ে কাছের একটি ঘরে গিয়ে তাদের বলি, আমরা ইসলামী ব্যাংকের অফিসার। ছিনতাইকারী সর্বস্ব কেড়ে নিয়েছে। আমাদের একটু পানি দিন। তখন ওই পরিবারের লোকজন বাথরুম দেখিয়ে দিলে আমরা চোখে পানি দেই। তখনও আমরা চোখ খুলতে পারছিলাম না। প্রায় ৩০ মিনিট পানি দেওয়ার পর ওই পরিবারের মোবাইল থেকে স্বজন ও ব্যাংকে ফোন করি। পরে ব্যাংক থেকে আমাদের সহকর্মীরা এসে আমাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রথমে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পরে চক্ষু বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণ করি। চক্ষু ওয়ার্ডে চোখে ওয়াশ করার পর কিছুটা স্বস্তি আসে। আমাদের আগে আরেক যাত্রীকে একই কায়দায় রাস্তায় ফেলে দিয়েছে ছিনতাইকারীরা। ওই ব্যক্তি আমাদের সাথে গাড়িতে উঠলেও পরিচয় জানতে পারিনি।’ তিনি বলেন, ‘প্রথমে আমাদের মানিব্যাগ, মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়। আমার মানিব্যাগে নগদ ৭ হাজার টাকা ও এটিএম কার্ড ছিল। ছিনতাইকারীরা এটিএম কার্ড নেওয়ার পর পাসওয়ার্ড দিতে বাধ্য করে।’
এ ব্যাপারে মীরসরাই থানার ওসি মুজিবুর রহমান গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘আমরা দুই ব্যাংক কর্মকর্তাকে ছিনতাইয়ের খবর জেনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি আমরা জেনে ভিকটিমদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাটি আমরা গভীরভাবে তদন্ত করছি। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, আবদুল মোমিন বাংলাদেশ প্রতিদিন চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসের স্টাফ রিপোর্টার রেজা মুজাম্মেলের ছোট ভাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমামলা জটে আটকে আছে দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব
পরবর্তী নিবন্ধশঙ্কার শীতে শনাক্তের হার কমে ছয় শতাংশের নিচে