আবারও প্রক্রিয়াগত জটিলতায় পড়ল চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ‘আধুনিক খাদ্য পরীক্ষাগার’ বা ‘ফুড সেফটি ল্যাবে’ জনবল নিয়োগের বিষয়টি। গতকাল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ল্যাবটির জনবল কাঠামো বিষয়ে একটি সভা হয়েছে। এতে জনবল নিয়োগের বিষয়ে আরো যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে ল্যাবটিতে দ্রুত জনবল নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে একধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ২৮ কোটি ব্যয়ে নগরীর বিবিরহাটে স্থাপিত ল্যবটিতে জনবল নিয়োগ না হওয়ায় মিলছে না ল্যাবটির কার্যকর সুফল।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগের জন্য জনবল কাঠামোর একটি অর্গানোগ্রাম স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল চসিক। ২০১৬ সালে পাঠানো এ অর্গানোগ্রামে পরিচালকসহ ২৩ পদে ৩৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারির অনুমোদন চাওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১৪ পদের বিপরীতে ২৪ জনের অনুমোদন দেয় এবং বাকি পদগুলো আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে পূরণের নির্দেশনা দিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে। সর্বশেষ গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ে সভায় বিষয়টি আরো পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে চসিকের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, বৈঠকে কিছু কোয়ারি চাওয়া হয়েছে। তার উত্তর সিটি কর্পোরেশন লিখিতভাবে জানাবে। চসিক সূত্রে জানা গেছে, আরবান পাবলিক অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট হেলথ সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (ইউপিইএইচএসডিপি) আওতায় এ খাদ্য পরীক্ষাগারটি নির্মাণ করা হয়েছে। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করে এডিবি। একই প্রকল্পের অধীন ঢাকায়ও একটি ফুড ল্যাব নির্মাণ করা হয়েছে। ৮ হাজার বর্গফুটের অবকাঠামোগত কাজ শেষে চট্টগ্রামের খাদ্য পরীক্ষাগারটিতে স্থাপন করা হয়েছে ৬টি আধুনিক ল্যাব। এরপর খাদ্যের ভেজাল শনাক্ত ও গুণাগুণ নির্ণয়ে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে ৮২টি যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়। ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ল্যাবটির ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেছিলেন। ২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল ল্যাবটিতে খাদ্যের নমুনা পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছিল চসিক।
ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর ‘মান রক্ষা করা, প্রশিক্ষিত ও অভিজ্ঞ জনবল নিয়োগ এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপন ও তার রক্ষণাবেক্ষনের ব্যবস্থা করা’ এই তিন শর্তে পরীক্ষার অনুমোদন দেয়। এর পর থেকে ল্যাবে সিটি করপোরেশনের খাদ্য পরিদর্শকদের মাধ্যমে সংগৃহীত খাদ্যপণ্য ও খাবার পানিসহ বিভিন্ন পানীয় পরীক্ষামূলক টেস্ট করা হচ্ছে। নানা খাদ্য পরীক্ষার যে উপকরণগুলো (যন্ত্রাংশ) এখানে স্থাপিত হয়েছে তা ঢাকা ছাড়া দেশের আর কোথাও নেই। ফলে পরিপূর্ণভাবে চালু হলে ল্যাবটি এই অঞ্চলের খাদ্যের মান নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। যা ২০১৩ সালে প্রণীত এবং ২০১৬ সাল থেকে কার্যকর হওয়া খাদ্য আইন বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।