চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) নির্বাচনে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বিএনপি। যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করলে দলের নির্বাচনী মনিটরিং সেল থেকে বাদ দেওয়া হবে দায়িত্বপ্রাপ্তদের। এছাড়া দল সমর্থিত মেয়র, সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালাবেন একসঙ্গে। এমনকি পোস্টারও একসঙ্গে লাগাবেন।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির প্রথম পরিচিতি সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে এ সভা হয়। নগর বিএনপির আহ্বায়ক ও চসিক মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম। তিনি আজাদীকে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আগেই কেন্দ্রে সুপারিশ করেছিলাম। মাঝখানে নির্বাচন স্থগিত থাকায় সে বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি। মঙ্গলবার নগর বিএনপির নির্বাহী কমিটির যে সভা হয়েছে সেখানে বিদ্রোহীদের সরে যেতে বলেছি। অন্যথায় পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সভায় উপস্থিত একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বিএনপিতে পাঁচজন বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন। এর মধ্যে শুধু ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে আছেন দুই প্রার্থী। এরা হচ্ছেন আজিজুর রহমান বাবুল ও মহসীন আলী চৌধুরী। এর মধ্যে মহসীন আলী চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করেছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। কিন্তু নগর বিএনপির গঠিত মনোনয়ন বোর্ড তাকে সমর্থন দেয়নি। এই ওয়ার্ডে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হচ্ছেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান কাউন্সিলর মো. আবুল হাশেম।
এদিকে তিনটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডেও (মহিলা কাউন্সিলর) বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন পৃথক দুটি থানা কমিটির সভাপতি। এর মধ্যে ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী, ১০ নম্বর উত্তর কাট্টলী ও ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত চার নম্বর ওয়ার্ডে আকবর শাহ থানা মহিলা দলের সভাপতি ইসমত আরা জেরিন; ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া, ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ও ১৯ নম্বর দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ছয় নম্বর ওয়ার্ডে বাকলিয়া থানা মহিলা দলের সভাপতি শামীমা নাসরিন এবং ১৪ নম্বর লালখান বাজার, ১৫ নম্বর বাগমনিরাম ও ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডে রিজিয়া বেগম বুলু বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। এর মধ্যে ৯, ১০ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে সকিনা বেগম, ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে মাহমুদা সুলতানা ঝর্ণা এবং ১৪, ১৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে দল সমর্থিত প্রার্থী হচ্ছেন মনোয়ারা বেগম মনি।
গতকালের সভার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর আজাদীকে বলেন, বিদ্রোহীদের সরে যেতে আগে চিঠি দিয়েছিলাম। এখন আবার দেব। সরে না গেলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা একসঙ্গে প্রচারণা চালাবেন। কাউন্সিলর প্রার্থীদের সঙ্গে ওয়ার্ড বিএনপির দূরত্ব থাকলে সেটা ঘুচিয়ে নিতেও নির্দেশনা দিয়েছি।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি নগরীর ৪১ জন কাউন্সিলর এবং ১৪টি সংরক্ষিত আসনে মহিলা কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে বিএনপির মনোনয়ন বোর্ড। এর আগে কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ২০৫ জন দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।