এক যুগেরও বেশী সময় ধরে নগরীর ফতেয়াবাদ এলাকায় নতুন ভবন নির্মাণের কোন নকশার অনুমোদন দিচ্ছে না চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ‘ডেভেলপমেন্ট অব ফতেয়াবাদ নিউ টাউন’ আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এলাকা চিহ্নিত না হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ চরম সংকটে পড়েছেন। ২০০৭সালে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হলেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি। সিডিএর সিদ্ধান্তহীনতার খেসারত দিতে হচ্ছে পুরো এলাকার মানুষকে। সিডিএ এলাকা চিহ্নিত করার জন্য সার্ভে করবে বলে জানিয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৪ হাজার ৭শ একর জায়গার ওপর ‘ডেভেলপমেন্ট অব ফতেয়াবাদ নিউ টাউন ইন চট্টগ্রাম’ নামে আধুনিক উপশহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল ২০০৭ সালে। কিন্তু ঠিক কোন এলাকার ভূমিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে তা চিহ্নিত করা হয়নি। প্রকল্প গ্রহণের ৬ বছর পর ২০১৩ সালের জুলাই মাসে প্রণীত মাস্টার প্ল্যানে প্রকল্পটি নিয়ে নতুন করে আলোচনা হয়। ওই সময় প্রকল্পের এলাকা ২ হাজার ৩শ একর বাড়িয়ে ৭ হাজার একরে উন্নীত করা হয়। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে প্রকল্পটি শুরু করে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করার কথা। ২০১৪ সালে প্রকল্প সারপ্রাইজ তৈরি করা হয়। আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গৃহীত প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সিডিএ প্রকল্পটি নিয়ে পরে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৯ সালের জুলাই মাসে প্রকল্পটির কাজ শুরু হওয়ার কথা। শেষ হওয়ার কথা ২০২২ সালের জুনে। কিন্তু প্রকল্প গ্রহণের নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। ১৩ বছর গত হলেও এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন কিছুই হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, প্রকল্প গ্রহণ এবং কিছু ফাইল চালাচালি হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটছে সেই তখন থেকে। প্রকল্পের জন্য বিস্তৃত এলাকার হাজার হাজার মানুষকে বাড়ি নির্মাণের কোন অনুমোদন দিচ্ছে না সিডিএ। প্রবাসীসহ শত শত মানুষ নিজেদের বাড়ি ঘরের উন্নয়ন করতে পারছেন না। বাড়ি ঘর বিক্রি করে অন্য কোথাও চলে যাবেন সেই সিদ্ধান্তও মানুষ নিতে পারছেন না। সিডিএ হুকুম দখল করবে কি করবে না তাও মানুষের অজানা। প্রকল্পটির মতো নিজেদের ভবিষ্যত নুয়েও পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছেন এলাকার হাজার হাজার মানুষ।
বিষয়টি নিয়ে গতকাল সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফতেয়াবাদে নকশা অনুমোদন বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, প্রকল্পের এলাকা নিয়ে কিছু সমস্যা আছে। তাই নকশা অনুমোদন দেয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, অচিরেই আমরা একটি টিম গঠন করে সার্ভে পরিচালনা করবো। আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় ভূমি চিহ্নিত করে দেবো। এক বাইরের ভূমিতে ভবন নির্মাণে অনুমোদন দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও সিডিএর চিফ ইঞ্জিনিয়ার কাজী হাসান বিন শামস জানান।