চিকিৎসা ক্ষেত্রে ও সমাজ সেবায় ডা. ইব্রাহিম একজন প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক ক্ষেত্রে তিনি নানামুখী অবদান রেখে গেছেন। এর অন্যতম দৃষ্টান্ত ঢাকার বারডেম হাসপাতাল ও গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা। আজ তাঁর ১০৭তম জন্মবার্ষিকী।
ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিমের জন্ম ১৯১১ সালের ৩১শে ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদে। কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে ১৯৩৮ সালে এম.বি.বি.এস ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ১৯৪৯ সালে লন্ডনের রয়েল কলেজ অব ফিজিশিয়ানস থেকে অর্জন করেন এমআরসিপি।
কর্মময় জীবনে ইব্রাহিম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকেছেন। কিন্তু অর্থ বা খ্যাতির মোহ তাঁকে আচ্ছন্ন করেনি কখনো। নিরন্তর নিবেদিত ছিলেন মানব কল্যাণে। বহুমূত্র রোগীদের স্বাস্থ্য পরিচর্যার জন্য ১৯৮০ সালে তিনি ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করেন বারডেম হাসপাতাল, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি আদর্শ ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত। দীর্ঘ তিন দশকেরও অধিক সময় ডা. ইব্রাহিম বিনামূল্যে স্বাস্থ্য ও মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি বহুমূত্র রোগ সম্পর্কে রোগীদের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে গেছেন।
দরিদ্র ও বেকার বহুমূত্র রোগীদের জন্য তিনি পুনর্বাসন ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলেন। সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে পরিবার পরিকল্পনার নানা কর্মসূচিতেও তিনি নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। বাংলাদেশ সরকারের প্রথম জনসংখ্যা নীতি প্রণয়নে তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল। বারডেম হাসপাতালেও রয়েছে একটি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ। স্বাস্থ্য এবং সমাজসেবায় সৃজনশীল, নিঃস্বার্থ অবদানের জন্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মোহাম্মদ ইব্রাহিম নানা পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। বাংলাদেশে পেয়েছেন জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদা। ১৯৮৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিনি প্রয়াত হন।