ব্যাসিলাস সাবটিলিস নামের ব্যাকটেরিয়া তথা অণুজীবের ওপর গবেষণা করে বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছেন চট্টগ্রামের দুই সন্তান আনাস আহমেদ ও তালহা জুবায়ের।
ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড ইনভেশন ফেয়ার (আইএসআইএফ) শীর্ষক বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনভিত্তিক প্রতিযোগিতাটি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। প্রাক্বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩৩০টি দল অংশ নেয়। এর মধ্যে চার ধাপে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় রানারআপ হন বাংলাদেশ দলের দুই সদস্য আনাস ও তালহা। করোনা মহামারির কারণে এবার পুরো প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয় অনলাইনে। এতে চ্যাম্পিয়ন হন যুক্তরাষ্ট্র ও নেদারল্যান্ডের প্রতিযোগীরা এবং প্রথম রানারআপ হয় চীন।
বিজয়ী আনাস নগরের চান্দগাঁও এলাকার মো. আনোয়ার হোসাইন ও নাসরিন খানমের সন্তান। এর আগে তিনি অর্জন করেছেন জাতীয় ফিজিক্স অলিম্পিয়াডের চ্যাম্পিয়ন পদক ও জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডে রানারআপ পুরস্কার। মো. ছিদ্দিকুর রহমান ও তাসলিমা বেগমের ছেলে তালহা ইতোপূর্বে বিজয়ী হয়েছেন বায়োলজি অলিম্পিয়াডে। দুজনই চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল থেকে এসএসসি সমাপ্ত করে সমপ্রতি ভর্তি হয়েছেন নটরডেম কলেজে।
তালহা ও আনাসের পরীক্ষার বিষয় ছিল ব্যাসিলাস সাবটিলিস অণুজীবের উপস্থিতিতে মরিচের বৃদ্ধি বেড়ে যায় এবং তার পরিপক্বতাও দ্রুততর। ছয় মাস নিজেদের বাসার বারান্দায় ও ছাদে পরীক্ষাটি চালান তারা। মাটিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে ব্যাসিলাস সাবটিলিস ব্যাকটেরিয়া অন্যতম। এ প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া কীভাবে বীজের অঙ্কুরোদ্গম সময়, অঙ্কুরোদ্গম হার এবং চারার বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে সেটাই ছিল প্রজেক্টের মূল বিষয়। পরীক্ষণটি করা হয়েছিল মরিচ বীজের ও বীজ অঙ্কুরিত হয়ে উৎপন্ন চারার ওপর এবং সাধারণভাবে বৃদ্ধির সাথে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে বৃদ্ধির তুলনা করে দেখা যায়, এ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে চারার বৃদ্ধি খুব দ্রুত হয়। অঙ্কুরোদ্গমের সময়ও হ্রাস পায় এবং অঙ্কুরোদ্গম হার বৃদ্ধি পায়। এই কাজের ভিডিও উপস্থাপন, পরবর্তীতে তার ওপর পোস্টার উপস্থাপন, বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে উপস্থাপনা, এর ওপর দীর্ঘ নিবন্ধ লেখা এবং সর্বশেষ আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান বিজ্ঞানী ও গবেষকদের সামনে উপস্থাপন করতে হয় নিজেদের কাজ।
উল্লেখ্য, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, প্রকৌশল, প্রযুক্তি ও পরিবেশবিজ্ঞান ক্যাটাগরিতে প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয় ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স অ্যান্ড ইনভেশন ফেয়ার প্রতিযোগিতা। এতে বিশ্বে বিরাজমান কোনো সমস্যা সমাধানের উপায় বের করা কিংবা প্রচলিত পদ্ধতির চেয়ে অধিকতর কার্যকর কোনো পদ্ধতিতে কাজ করার উপায় বের করতে হয়।