হালদাকে জানতে চবি সাংবাদিক সমিতির দিনব্যাপী আয়োজন

চবি প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ২৯ ডিসেম্বর, ২০২০ at ১১:০৩ অপরাহ্ণ

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের একমাত্র মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করেছে সরকার।
এ নদী সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে দিনব্যাপী সফরের আয়োজন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)।
‘হালদাকে জানি’ প্রতিপাদ্যে আজ মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) এ আয়োজন করে সংগঠনটি।
এসময় হালদা সম্পর্কে নানা তথ্য ও হালদা থেকে মৎস্য আহরণের বাস্তবিক প্রয়োগগুলো ঘুরে দেখেন তারা। কথা বলেন স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীদের সাথে।
সকাল সাড়ে দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেইটে একসাথ হয়ে পাঁচজন করে ভাগ হয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে গড়দুয়ারা হাটে হালদা পাড়ে যান তারা। এরপর সেখানেই অনানুষ্ঠানিকভাবে ছোট পরিসরে আয়োজন হয় একটি কর্মশালার।
এতে বক্তব্য রাখেন সমন্বিত উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের (আইডিএফ) প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. শহীদুল আমিন চৌধুরী ও হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরি, চবির পরিচালক ও চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মনজুরুল কিবরিয়া। সমিতির সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের চৌধুরীর সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্বে করেন সমিতির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল।
এসময় শহীদুল আমিন চৌধুরী বলেন, “হালদা আমাদের জাতীয় সম্পদ। গত দশ বছর আগেও আমরা এটার গুরুত্ব বুঝিনি কিন্তু যখন দেখা গেছে জাতীয় অর্থনীতিতে এটি বড় ভূমিকা রাখছে তখন আমাদের টনক নড়েছে। প্রশাসনও এ ব্যাপারে সতর্ক হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এটাকে বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা আশা রাখি একদিন এটি ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হবে। তবে এ নদী রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হলে এটি রক্ষা করা সম্ভব।” এসময় সকল দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখার পরামর্শও দেন তিনি।
প্রফেসর ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, “হালদা নিছক নদী নয়। এটি আমাদের প্রকৃতির অনন্য দান। দেশের মৎস্যক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে এ নদী। হালদা বিশ্বের একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী যেখান থেকে মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। হালদা থেকে রুই, দেশের ৭০ শতাংশ কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ মাছের ডিম সংগ্রহ করা হয়।”
এসময় তিনি ডিম আহরণের বর্ণনা দিয়ে বলেন, “বছরের এপ্রিল, মে ও জুন মাসের যেকোনো একদিন মা মাছেরা এ নদীতে ডিম দিয়ে থাকে। নদীর যে স্থানে ডিম দেয় সেটাকে ‘কুম’ বলে। কুমের গভীরতা ৬০-৭০ ফুট থাকে। হালদায় প্রায় ২৪টা কুম করেছে। মা মাছদের ডিম পাড়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় রয়েছে। সেগুলো হলো অমাবস্যা অথবা পূর্ণিমা, ভাটার আগ মুহূর্ত অথবা পূর্ণ ভাটা, পাহাড়ি ঢলের ঘোলা পানি, বৃষ্টি, ঠাণ্ডা আবহাওয়া ও নদীর পানি ডিম পাড়ার উপযুক্ত হওয়া। এসময় স্থানীয়দের মুখে শোনেন ডিম আহরণের বর্ণনা।”
এরপর মধ্যাহ্নভোজ সেরে নদী ভ্রমণে বের হয় সবাই। এর আগে ডিম রাখার গর্ত পরিদর্শন করেন সবাই। এরপর সেখান থেকে যাওয়া হয় মোবারকখীল হ্যাচারি দেখতে। সেখান থেকে আবার গড় দুয়ারা নয়াহাট ঘোরাঘুরি ও বিকালের নাস্তা শেষে পরিসমাপ্তি হয় সফরের।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলাইফ সাপোর্টে নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতুল্লাহ
পরবর্তী নিবন্ধসৈকতের দায়িত্ব কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দিতে সুপারিশ