“শিক্ষকতা-হলো মহান ব্রত।” আমাদের সমাজে “শিক্ষকতা পেশাকে- মহান,আদর্শ,ও সম্মানিত পেশা অভিধায় ভূষিত করা হয়। সমাজে-রাষ্ট্রের চোখে “শিক্ষকেরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর।” একটি দেশের টেকসই উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা ও মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটে। মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছেন। সামপ্রতিক কালে শিক্ষকদের অবস্থান (নতুন নতুন বিধিমালার কারণে) অকল্পনীয় ভাবে পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু বেসরকারিশিক্ষকেরা সামাজিক মর্যাদা ও আর্থিকভাবে আরো বেশি বঞ্চিত হচ্ছেন এবং আরো বেশি বেশি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সমপ্রতি করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তাতে সরকারি ও বেসরকারিএমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা আর্থিকভাবে কিছুটা সচ্ছল থাকলেও বেসরকারি নন এমপিও এবং সরকারের অনুমতিপ্রাপ্ত (প্রাথমিক,কিন্ডারগার্টেন,মাধ্যমিক, কলেজের অনার্স -মাস্টার্স) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারনেই ছাত্রছাত্রীরা টিউশন ফি দিতে চাইছে না, এ-ই অজু হাতে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা (অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফান্ডে টাকা থাকা সত্ত্বেও) শিক্ষকদের বেতন ভাতা দিচ্ছেন না। বর্তমানে দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতির কারণে শিক্ষকেরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। শিক্ষকতা পেশার সাথে “নৈতিকতা, সততা, মূল্যবোধ,অতি মাত্রায় জড়িত। শিক্ষক সমাজকে অবহেলিত রেখে, অভুক্ত রেখে, অসম্মানজনক অবস্থায় রেখে, জাতীয় উন্নয়ন তথা শিক্ষার টেকসই উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়। শিক্ষক হিসাবে আমাদেরকে সমাজের সর্বস্তরে শিক্ষকদের কথা ভাবতে হবে। শুধু নিজেদের আরাম- আয়েস,স্বার্থের কথাই চিন্তা করলে চলবে না। যারা অনাহারে, অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছেন,তাদের কথা ও সচেতন শিক্ষক হিসেবে আমাদেরকে ভাবতে হবে। যে সমস্ত শিক্ষক পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানো সমাজের -বিত্তবান,সহৃদয়বান, সর্বোপরি সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। এ ক্ষেত্রে আমি একজন শিক্ষক হিসেবে বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে- “মানবেতর জীবনযাপনকারী শিক্ষকদের-এ মুহূর্তে আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া ও প্রয়োজনে -” ঘরে বসেই পত্র পত্রিকায় লেখা লিখি /মিডিয়া উপস্থাপন,/ সাক্ষাৎ এর মাধ্যমে তাদের দুরবস্থা তুলে ধরে পাশ দাঁড়ানোর জন্য সমগ্র শিক্ষক সমাজের প্রতিও আহবান জানাচ্ছি।