মাতৃস্নেহ বঞ্চিত বাঘের ছানাটি মানুষের স্নেহে বেড়ে উঠছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায়। এক মাস আট দিন বয়সী এ বাঘছানাকে আদর যত্নে বড় করে তুলছেন চিড়িয়াখানার চিকিৎসকসহ অপর কর্মীরা। চিড়িখানার কোয়ারেন্টিন সেন্টারের একটি জায়গায় রেখে ছোট শিশুদের মতোই ফিডারে দুধ খাওয়ানো হচ্ছে বাঘ ছানাটিকে। ছোট ছোট বল আর কাপড়ের তৈরি একটি খেলনা বাঘের সাথে খেলাধুলা করে সময় কাটছে তার। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ও চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন শুভ জানান, ১৪ নভেম্বর রাতে ‘জয়া’ নামের একটি বাঘিনী তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। তবে শাবকগুলোকে মা দুধ খেতে না দেওয়ায় পরদিন একটি এবং ১৮ নভেম্বর আরও একটি শাবক মারা যায়। জীবিত এই শাবকটিকে মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে আলাদা করে কোয়ারেন্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে। সেখানে একাই থাকছে বাঘ ছানা। হাতে ধরে খাওয়ানো হচ্ছে দুধ। খবর বিডিনিউজের। চিকিৎসক শুভ বলেন, শুরুতে আলাদা রেখে যখন তাকে দুধ খাওয়ানো হয়েছিল তখন তার হজমের সমস্যা হয়েছে। সাথে রক্ত পায়খানা হয়েছিল এবং তার যেভাবে ওজন বাড়ার কথা ছিল তা না হয়ে উল্টো ওজন কমতে শুরু হয়েছিল। এ সময় ভিন্ন ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বাঘের ছানাটিকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি জানান, শুরুতে বাঘের শাবকটিকে বাজারে পাওয়া বিড়ালের দুধ খাওয়ানো হয়েছিল। এখন ছাগলের দুধের সাথে অন্যান্য কিছু উপকরণ মিশিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে। বাঘের ছানাটি আগের চেয়েও ভালো অবস্থায় আছে। তার ওজন হয়েছে দুই কেজি ৩০০ গ্রাম। নিজে নিজে দৌঁড়াতে পারছে, আগের চেয়ে সে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠেছে। তিন মাস পর্যন্ত সে এ অবস্থায় থাকলে তাকে খাঁচায় দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় যে বাঘিনী শাবকগুলোর জন্ম দিয়েছে সেটার জন্মও এই চিড়িয়াখানায়। বর্তমানে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় দুটি বাঘ ও চারটি বাঘিনী রয়েছে। ২০১৬ সালের ৯ ডিসেম্বর ৩৩ লাখ টাকায় কেনা ১১ মাস বয়সী রাজ এবং ৯ মাস বয়সী পরীকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়।