নগরীর সানশাইন গ্রামার স্কুলের ছাত্রী তাসফিয়া আমিন (১৬) আত্মহত্যা করেছে জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল মহানগর হাকিম আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক ফিরোজ উদ্দীন চৌধুরী সম্পূরক এই প্রতিবেদন দাখিল করেন। একইসঙ্গে এ ঘটনায় তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে দায়ের করা হত্যা মামলাটি ‘তথ্যগত ভুল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলাটির সব আসামিদের অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) শাহাবুদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আগামী ২৭ ডিসেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
পিবিআইর তদন্তে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ১ মে তাসফিয়া বাবা-মায়ের ভয়ে পতেঙ্গার নেভাল একাডেমিতে গিয়ে আত্মহত্যা করার জন্য নদীতে ঝাঁপ দেয়। পরদিন তার মরদেহ পাওয়া যায়। এ মৃত্যুর জন্য তাসফিয়া নিজেই দায়ী। তার শরীরে যে সমস্ত বাহ্যিক ক্ষত পাওয়া গেছে, তা নদীর পানির ঢেউতে পাথরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে হয়েছে বলে চিকিৎসকের মতামতে পাওয়া গেছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, আদনান মির্জার সঙ্গে তাসফিয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে তাসফিয়ার বাবা-মা মোবাইলের সিম খুলে নেয়। তবে তারা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখছিল।
ঘটনার দিন বিকেলে তাসফিয়া ড্রয়িং রুমে ছোট বোনকে নিয়ে টিভি দেখছিল। বাবা-মায়ের অনুপস্থিতে সে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। এরপর খোঁজাখুঁজির পর চকবাজারের একটি রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা বেরিয়ে আসে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, আদনান মির্জার কল লিস্ট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সেদিন বিকেলে সে পতেঙ্গা এলাকায় ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন তাসফিয়াকে নদীর পাড়ে একা ও বিষন্নভাবে বসে থাকতে দেখেছে। এ মামলায় তাসফিয়ার প্রেমিক আদনান মির্জাসহ ৬ জনকে আসামি করে যে মামলা হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ঘটনার সময় আদনান মির্জা কিশোর থাকায় শিশু-কিশোর আদালতে পৃথক চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করার কথা জানান পিবিআই পরিদর্শক। একইসঙ্গে এ মামলায় জব্দকৃত আলামতগুলো বিনষ্ট করার আবেদন করেছেন তিনি। আদনান লোহাগাড়ার উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ব্যবসায়ী ইসকান্দর মির্জার ছেলে। এ মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন সোহেল বিন নাসির (১৯), শওকত মিরাজ (১৮), ওয়াজ বিন আসলাম আসিফ প্রকাশ মিজান (২৩), ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম (২৪) ও মো. ফিরোজ (৩০)।