কার্যক্রম বন্ধ, দুশ্চিন্তায় হাজারো মানুষ

আনোয়ারায় উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন প্রকল্প

আনোয়ারা প্রতিনিধি | শনিবার , ১২ ডিসেম্বর, ২০২০ at ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারায় উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন প্রকল্পের (সিইআরপি) কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় এখানকার হাজারো মানুষ। উপজেলার ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধে পরিত্যক্ত জায়গার বন্দোবস্ত নিয়ে যারা মাথা গোঁজার আশায় ছিলেন, তাদের চোখেমুখে এখন অন্ধকার। সিইআরপি প্রকল্পটি গতি পাবে কিনা বলতে পারছে না বাস্তবায়নকারী সংস্থা পানি উন্নয়ন বোর্ড। আবেদনকারীরা বলছেন, প্রকল্পটি চালু হলে সরকারের কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে।
স্থানীয়রা জানান, আনোয়ারার কর্ণফুলী বদলপুরা থেকে রায়পুর গহিরা কোস্টগার্ড পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের দুই পাশে পরিত্যক্ত ভূমি উন্নয়ন করে দীর্ঘ দিন ধরে এখানে বসবাস করছে কয়েকশ অসহায় পরিবার। বন্দোবস্ত নিতে তাদের অনেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করেন। এসব ভূমিতে বর্তমানে মসজিদ, বাজার, পুলিশ ফাঁড়ি, হাস- মুরগি ও গরু-ছাগলের খামারসহ নানা স্থাপনা আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন এসব পরিত্যক্ত জমি সিইআরপি প্রকল্পের আওতায় বন্দোবস্ত দেওয়া হলেও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উপকারের পাশাপাশি লিজ বাবদ সরকার রাজস্ব পেত। আয়বর্ধক কার্যক্রমে রূপ দেওয়ার জন্য রাজস্ব বাড়ানো ছাড়াও বেড়িবাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ ও সুরক্ষার কথা বিবেচনায় রেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ২০০০ সালে বাঁধের পাশের পরিত্যক্ত ভূমি উন্নয়ন করে বসতি স্থাপনের জন্য উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন প্রকল্প (সিইআরপি) চালু করে। এতে স্থানীয়দের মাঝে আশার সঞ্চার হয়।
একটি বেসরকারি এনজিওর মাধ্যমে পরিচালিত এই প্রকল্পের অধীনে স্থানীয় অর্ধশতাধিক পরিবার অন্তর্ভুক্ত হয়। পরে নানা কারণে কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়ে আবেদনকারীরা। এরই মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড মেরিন একাডেমি সড়কে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন রাঙ্গাদিয়া কেন্দ্রের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়। ২০১৭ সালের ২৮ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। গুরুত্বপূর্ণ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দেওয়ার কথা শোনা গেলেও স্থানীয় বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও বসবাসকারী ব্যক্তির লিজের আবেদন ঝুলে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
স্থানীয়দের অভিমত, পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি ইজারার মাধ্যমে এসব পরিত্যক্ত ভূমি আবেদনকারীদের কাছে হস্তান্তর করে, তাতে বছরে কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হবে। এছাড়া বেড়িবাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ ও সুরক্ষার কাজে এরা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, লিজ কার্যক্রম চালু না থাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
আবেদনকারী উত্তর বন্দর গ্রামের নাছির মিয়া জানান, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের সুপারিশসহ ২০১৬ সালের ২৬ নভেম্বর ইজারার আবেদন করি। এখনো সেই আবেদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেয়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, ২০০০ সালের উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন প্রকল্পের কার্যক্রম সম্পর্কে আমি অবগত নই। বর্তমানে সব ধরনের লিজ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যদি এ কার্যক্রম চালু হয় তাহলে এই খাতে বিপুল রাজস্ব আয় হবে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধউচ্ছ্বাসে মেতেছে পদ্মাপাড়ের মানুষ
পরবর্তী নিবন্ধসুপ্রিয়র হাতে কাঠের জাদু