চট্টগ্রামে বাড়তে শুরু করেছে শীতের প্রকোপ। গতকাল কুয়াশার কারণে দিনের অর্ধেক সময় সূর্যের দেখা যায়নি। হঠাৎ কুয়াশার পাশাপাশি শীতে ভাসমান মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে দেশে প্রথম শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে জেঁকে বসবে শীত। তখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কোথাও কোথাও ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসতে পারে।
গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে সীতাকুণ্ডে ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বড় এলাকা জুড়ে তাপমাত্রা নেমে ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে চলে এলে আবহাওয়াবিদরা তাকে বলেন মৃদু শৈপ্রবাহ, থার্মোমিটারের পারদ ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এলে তাকে মাঝারি ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বলে ধরা হয়।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, আগামী ১৭ থেকে ১৮ ডিসেম্বর নাগাদ দেশে প্রথম শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। প্রথমদিকে, দেশের উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ অনুভূত হবে। পরবর্তীতে দেশজুড়ে ও শৈত্যপ্রবাহ অনুভূত হবে। উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ হলেও এর প্রভাবে দেশজুড়ে তাপমাত্রা নেমে আসবে। শৈত্যপ্রবাহের সময় উত্তরাঞ্চলে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসতে পারে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার স্থানীয় পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় চট্টগ্রামের আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সেইসাথে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত ও দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। উত্তর উত্তর-পূর্ব দিক হতে ঘণ্টায় ৮-১৫ কি.মি. বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। চট্টগ্রামে শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন ১৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় আবহাওয়া অফিসের আহবাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে রংপুর বিভাগের দুয়েক জায়গায় হালকা কিংবা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে এবং তা কোথাও কোথাও বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে হঠাৎ ঘন কুয়াশা ও শীতে বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। শীতে ঠান্ডাজনিত রোগ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষ ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ইতিমধ্যে এ ধরনের রোগী ভর্তি শুরু হয়ে গেছে অনেক হাসপাতালে। কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় শীতে দিন-মজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ নাকাল হয়ে পড়েছে।