শোয়েব আলী বোখারি (৩২)। পেশায় মোটর মেকানিক। তার বাড়ি ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার চরনাছিপুর গ্রামে। ২০০৮ সালে পদ্মার ভাঙনে বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যায় তার। এখন থাকেন ঢাকার বাড্ডায়। খেলাপাগল মানুষ। কোনো খেলার আয়োজন হলেই তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নিয়ে ছুটে যান মাঠে। মাঠের মানুষ তাকে ‘টাইগার শোয়েব’ নামেও ডাকেন। কারণ, বাংলাদেশের খেলা হলেই শোয়েব বেঙ্গল টাইগারের সাজে নিজেকে সাজান। গতকাল বৃহস্পতিবারও গায়ে বেঙ্গল টাইগারের মতো দেখতে ডোরাকাটা জামা, মুখে রং মেখে ও দুই হাতে ধরা লাল-সবুজের পতাকা গায়ে জড়িয়ে তিনি পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান বসানো দেখতে যান। ছোট একটি নৌকায় চড়ে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের কাছে অবস্থান নেন। স্প্যান বসানোর সময় গলা ছেড়ে বলছিলেন, ‘শাবাশ বাংলাদেশ! বিজয় বাংলাদেশ!’ পরে তার ছবিটি স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।
শোয়েব আলী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি যখন জাতীয় পতাকা নিয়ে মাঠে যাই, তখন হারজিতের শঙ্কা থাকে। কিন্তু আজ শুধুই বিজয়। জাতীয় পতাকার মতোই পদ্মার বুকে আজ দাঁড়িয়ে গেল আমাদের গর্বের পদ্মা সেতু। বিজয়ের মাসে বিশ্ববাসী এই ঐতিহাসিক ক্ষণের সাক্ষী হয়েছে। আমিও জাতীয় পতাকা বুকে ধারণ করে পদ্মায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। দেশের এমন মাহেন্দ্রক্ষণেই তো জাতীয় পতাকা বুকে জড়ানো যায়। এ এক অন্য রকম বিজয়। ১৮ কোটি মানুষের বিজয়। বিশ্ববাসী বাঙালির এ বিজয় প্রত্যক্ষ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পদ্মাপারের মানুষ আমরা। পদ্মা আমাদের নিঃস্ব করেছে। জীবন-জীবিকা হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে বাঁচতে হচ্ছে। সেই পদ্মার বুকে স্বপ্ন দাঁড়িয়ে যাওয়ার এই এক অন্য রকম আনন্দ। এই সেতু পদ্মাপারের কোটি মানুষের ভাগ্য বদলে দেবে।’