রাউজানের গহিরা ইউনিয়নের দলই নগর এলাকার পদ্ম পুকুর থেকে গতকাল মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) নাছরিন আকতার সুবর্ণা (২৫) নামের যে নারীর মরদেহ উদ্ধার হয়েছে সেই ঘটনায় নিহতের বোন নাছিমা আকতার রাউজান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। বাদী নাছরিনের স্বামী মনছুর আলমসহ অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামী করে এ মামলা (মামলা নং-০৫, তাং-০৮-১২-২০২০) দায়ের করেন।
অবশ্য নিহতের স্বামী মনছুর আলমকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করার পর পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিল।
আজ বুধবার (৯ ডিসেম্বর) মামলার আসামী দেখিয়ে পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। খবর নিয়ে জানা যায়, নাছরিনের মরদেহের ময়নাতদন্তের পর তার আত্মীয়স্বজনরা বাবার বাড়ি ফটিকছড়ির জাহানপুরে নিয়ে দাফন করেছে।
এদিকে আজ বুধবার বিকালে নিহতের স্বামীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নাছরিনের ১১ মাস বয়সী ছেলে মোক্তাকিন কখনও কাঁদছে, আবার কখনও নির্বাক দৃষ্টিতে এদিক-সেদিক তাকাচ্ছে।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, “জিজ্ঞাসাবাদে নিহতের স্বামী মনছুর আলম হত্যাকাণ্ডের ব্যপারে অজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। আদালতের কাছে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে।” তিনি ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশ মাঠে আছে বলে জানান।
এদিকে একজন নারীকে হত্যা করার পর গলায় ইট বেঁধে পানিতে ডুবিয়ে দেয়ার ঘটনাটির সাথে কারা জড়িত থাকতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করছে স্থানীয়রাও।
হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ও হত্যাকারীদের শনাক্তে স্থানীয়রা গহিরা চৌমুহনী ও কালাচান্দ হাট এলাকায় স্থাপন করা সিসি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখতে পুলিশ বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, হতভাগী নাছরিন গত ৫ ডিসেম্বর তার সন্তানকে কোলে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। শিশুটিকে রেখে ঐ বাড়ি থেকে তিনি আবার ফিরে যান। গতকাল মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) যে পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয় তার শ্বশুরবাড়ি থেকে সেই পুকুর পাড় পর্যন্ত যেতে হলে গহিরা চৌমুহনী হয়ে সর্তার কালাচান্দ হাট ব্রিজ পার হয়ে তাকে যেতে হবে। ঐ পথে রয়েছে সিসি ক্যামেরা।
এই ব্রিজের পাশ ঘেঁষে আছে কাঠ-বাঁশের পাইকারি বাজার। রয়েছে অন্তত ১০টি করাত কলসহ নানা জাতের ব্যবসা। আর এসব কাজের সাথে এখানে নিয়োজিত আছেন স্থানীয়-অস্থানীয় শত শত শ্রমিক।