ব্যবহারের পর যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে মাস্ক

বাড়ছে সংক্রমণের ঝুঁকি আলাদা ডাস্টবিন স্থাপনের তাগিদ

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৩ ডিসেম্বর, ২০২০ at ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে ঘন ঘন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোঁয়া ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পাশাপাশি মুখে মাস্ক পরার উপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সাধারণ মানুষ এসব স্বাস্থ্যবিধি মানতে তেমন একটা আগ্রহী নয়। যার কারণে ৩ থেকে ৬ ফুটের সামাজিক/শারীরিক দূরত্ব এখন অনেকটা কিতাবের বিষয়। রাস্তাঘাটে, গণপরিবহনে কিংবা হাট-বাজারের চিত্র যেন আগের মতোই স্বাভাবিক। সাধারণের চলাফেরায় দেশে করোনার অস্তিত্ব বলতে কিছু আছে, এমনটাও বুঝার উপায় নেই। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার এমন হাল দেখে অন্তত মাস্ক পরা নিশ্চিতে জোর দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শীত আসতে না আসতে সংক্রমণও ফের বাড়তে শুরু করেছে। যার কারণে মাস্ক পরা নিশ্চিতে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেও দেয়া হয়েছে কঠোর নির্দেশনা। নির্দেশনার প্রেক্ষিতে তৎপর হয়েছে মাঠ প্রশাসনও। চালানো হচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি মাস্কবিহীন নারী-পুরুষকে জরিমানাও করা হচ্ছে। এ ধরনের অভিযানের ফলে মাস্ক পরার হার কিছুটা হলেও বাড়ছে বলে মনে করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। তবে মাস্ক পরার হার বাড়লেও ব্যবহৃত মাস্ক ছুঁড়ে ফেলা নিয়ে ভর করেছে নতুন উদ্বেগ। ব্যবহারের পর এসব মাস্ক যত্রতত্র ছুঁড়ে ফেলায় সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির কথা বলছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা বলছেন, যারা মাস্ক পড়ছেন, তাদের বেশিরভাগই ব্যবহৃত মাস্কটি নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলছেন না। যার কারণে রাস্তা-ঘাটে ও যত্রতত্র মাস্ক পড়ে থাকতে দেখা যায়। ব্যবহৃত এসব মাস্ক থেকেও ভাইরাস ছড়াতে পারে।
পরিধেয় মাস্কটি কোথায় ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে, সে বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে দেখা জরুরি বলছেন কঙবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া। মেডিসিনের এই অধ্যাপক মনে করেন, মাস্ক কেবল পরলেই হবে না। পরিধেয় মাস্কটি ফেলার জন্য একটি ডাস্টবিন বা যথাযথ জায়গা সুনির্দিষ্ট করা দরকার। যাতে করে পরিধেয় এসব মাস্ক সেখানে (নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে) ফেলার পর পুড়িয়ে ফেলা যায়। সিটিকর্পোরেশন ও পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো আলাদা করে এসব ডাস্টবিন স্থাপন করতে পারে। পরিধেয় মাস্কটি যেখানে-সেখানে ছুঁড়ে ফেলায় করোনা সংক্রমণ আরো বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করেছেন অধ্যাপক ডা. অনুপম বড়ুয়া।
একই পরামর্শ দিয়ে জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, আক্রান্তদের অনেকেই জানেন না যে তারা করোনা আক্রান্ত। নিজের অজ্ঞাতেই তারা শরীরে ভাইরাস বয়ে বেড়াচ্ছেন। বাইরে যাচ্ছেন, ঘুরছেন-ফিরছেন। সব কিছুই স্বাভাবিক ভাবে করছেন। মাস্ক পরে ঘুরাঘুরির পর সে মাস্ক যত্রতত্র ছুঁড়ে ফেলছেন। ফলে তাদের ছুঁড়ে ফেলা মাস্ক থেকে ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকিটা খুবই বেশি। যার কারণে মাস্ক ফেলার জন্য আলাদা ডাস্টবিন স্থাপন করাটা জরুরি। আলাদা ডাস্টবিনেই মানুষ ব্যবহার করা মাস্কটি ফেলবেন। এতে করে সংক্রমণের ঝুঁকিটা কমবে। নয়তো ব্যবহার করা মাস্ক যত্রতত্র এভাবে ছুঁড়ে ফেলতে থাকলে সংক্রমণও বাড়বে বলে মনে করেন প্রবীণ চিকিৎসক ডা. মাহফুজুর রহমান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিতু হত্যা তদন্তের অগ্রগতি জানতে চায় হাই কোর্ট
পরবর্তী নিবন্ধআঙ্কারায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বসাবে তুরস্ক