চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের পশ্চিম পাশের পাহাড়ে বিদ্যুতের তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এর জেরে শাহ আমানত হলে তল্লাশি চালিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের সহযোগিতায় এই তল্লাশি চালায় প্রক্টরিয়াল বডি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এসময় হলে অবৈধভাবে অবস্থান করা ১০ জনের আইডি কার্ড জব্দ করে কর্তৃপক্ষ।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. আতিকুর রহমান বলেন, ‘নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আমরা আমানত হলে তল্লাশি চালিয়েছি। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পেয়েছি। তারা বলেছে জিনিসপত্র নিতে এসেছে। তখন আমরা তাদের আইডি কার্ড রেখে দিয়েছি।’
জানা যায়, গত সোমবার দিনগত মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল ও শাহ আমানত হলের পশ্চিম পাশের পাহাড়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকা দামের বৈদ্যুতিক তার চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সময় বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। পাহাড়টির পূর্ব পাশে রয়েছে দুটি হল অপরদিকে বিশাল পাহাড় আর ঘন জঙ্গল। উত্তর এবং দক্ষিণ পাশে রয়েছে দুটি সড়ক। এরকম একটি জায়গায় কিভাবে এটি সম্ভব? এরকম প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। তবে সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন, এ কাজ কারো একা সম্ভব নয়। এতে অনেকে জড়িত রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহযোগিতা না থাকলে এই ধরনের ঘটনা ঘটানো সম্ভব নয় বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
চুরির ঘটনার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. আতিকুর রহমান আজাদীকে বলেন, এ ব্যাপারে আমি বেশি কিছু জানি না। তবে আমানত হলের প্রভোস্টকে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সহকারী প্রক্টর আহসানুল কবির পলাশ আজাদীকে বলেন, চুরির বিষয়টি মঙ্গলবার আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এরপর আমি সেখানে গিয়েছি। চুরির ঘটনা কখন হয়েছে সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হলে তল্লাশির ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট প্রফেসর নির্মল কুমার সাহা আজাদীকে বলেন, যারা অভিযানে গিয়েছিলেন তাদের সাথে আলাপ করতে হবে। প্রক্টরিয়াল বডি ও আবাসিক শিক্ষকরা ভালো বলতে পারবেন। চুরির ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি একই কথা বলেন। এ ব্যাপারে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও নিরাপত্তা দপ্তরের কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের ২১ এপ্রিল কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের প্রতিবন্ধী ই-লার্নিং সেন্টার থেকে ১৪টি কম্পিউটার এবং ৪টির সিপিইউ চুরির ঘটনা ঘটেছে। কর্তৃপক্ষের মতে সেটি একদিনে সম্ভব হয়নি। ধাপে ধাপে চুরি করেছে। সেই ঘটনায় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহবুবুল হককে আহ্বায়ক, আইসিটি সেলের সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট সিস্টেম এডমিনিস্ট্রেটর মো. মজনু মিয়াকে সদস্য সচিব এবং সহকারী প্রক্টর (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর) ড. মো. আতিকুর রহমানকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু সাত মাস পেরিয়ে গেলেও আলোর মুখ দেখেনি সেই তদন্ত কমিটি। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মাহবুবুল হক গতকাল রাতে আজাদীকে বলেন, আমার ব্যক্তিগত ঝামেলার কারণে কয়েক মাস দেশের বাহিরে থাকতে হয়েছে। যার কারণে তদন্তে বেশি সময় দিতে পারিনি। আমরা কাজটা এগিয়ে নিয়েছি। আগামী চার-পাঁচদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে পারব আশা করি।