বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড় এলাকার বেসরকারি পর্যটন কেন্দ্র ‘সাইরু রিসোর্টে’ অভিযান চালিয়েছে ভ্যাট গোয়েন্দা শাখা। অভিযানের সময় ভ্যাট গোয়েন্দারা ভ্যাট সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করে নিয়ে যান। তবে তাৎক্ষণিক কোনো জরিমানা বা মামলা করা হয়নি। গতকাল সোমবার এ অভিযান চালানো হয়।
ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীন অভিযানে নেতৃত্ব দেন। ভ্যাট গোয়েন্দার পৃথক আরেকটি দল উপপরিচালক তানভীর আহমেদের নেতৃতে সাইরু রিসোর্টের রাজধানীর বনানীস্থ হেডঅফিসেও অভিযান চালায়। প্রাথমিকভাবে ব্যাপক ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা। জব্দকৃত কাগজপত্রে দেখা যায়, রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। যেমন সদ্যসমাপ্ত অক্টোবর ২০২০ কর মেয়াদের রিটার্নে (যা নভেম্বর ১৫ তারিখে দাখিলকৃত) তাদের হোটেলে সেবা বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ১১.৩৯ লক্ষ টাকা, যার উপর ১৫% হিসেবে আদর্শ হারে পরিশোধিত মূসক ১.৭০ লক্ষ টাকা এবং আদর্শ হার ব্যতীত বিক্রয় ৪ লক্ষ টাকা, যার উপর ৭.৫% হারে পরিশোধিত মূসক ৩০ হাজার টাকা। উদ্ধার করা বিক্রয় তথ্য অনুসারে, ভ্যাট গোয়েন্দার দল দেখতে পান যে, ঐ মাসে বিক্রয় হয় ১.২৯ কোটি টাকা, যার উপর ১৫% হারে প্রদেয় মূসক ১৯.৪৭ লক্ষ টাকা অর্থাৎ মূসকসহ মোট বিক্রয় ১.৪৮ কোটি টাকা। এই হিসাব অনুসারে, কেবল অক্টোবর ২০২০ মাসে ভ্যাট ফাঁকি হয়েছে প্রায় ১৭.৪৭ লক্ষ টাকা। ভ্যাট গোয়েন্দারা অন্যান্য মাসেও অনুরূপ ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে। সাইরু রিসোর্ট গড়ে প্রতিমাসে ভ্যাট দিয়েছে প্রায় ১ লক্ষ টাকা। কিন্তু প্রকৃত বিক্রয় অনুসারে ভ্যাট প্রযোজ্য হয় মাসে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা।
সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীন ও উপপরিচালক তানভীর আহমেদ জানান, সাইরু কর্তৃপক্ষ ক্রেতাদের নিকট হতে ভ্যাট আদায় করলেও তা যথাযথভাবে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়নি। ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন। জব্দকৃত কাগজপত্র যাচাই ও আরো তদন্ত শেষে সাইরু রিসোর্টের বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
সাইরু রিসোর্টের স্বত্ত্বাধিকারী রাংলাই ম্রো জানান, ভ্যাট গোয়েন্দা সংস্থার একটি দল হঠাৎ সাইরু রিসোর্ট ভিজিট করে বিভিন্ন কাগজপত্র দেখেছেন। ভ্যাটে অসঙ্গতির অভিযোগে ভ্যাটের কিছু কাগজপত্রও তারা নিয়ে গেছেন। তাৎক্ষণিক কোনো অসঙ্গতি তারা পায়নি। কোনো ধরণের জরিমানাও করা হয়নি।
বান্দরবান জেলা ভ্যাট কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ভ্যাটের স্থানীয় অফিসের পক্ষ থেকে কোনো অভিযান চালানো হয়নি। ঢাকা থেকে এসে ভ্যাট গোয়েন্দারা অভিযান চালিয়েছে। আমরা বিস্তারিত বলতে পারবো না।