হীরে পাওয়ার গুঞ্জনে গুপ্তধন সন্ধানীদের ভিড় নাগাল্যান্ডের গ্রামে

আজাদী অনলাইন | শনিবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২০ at ৪:৩০ অপরাহ্ণ

উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য নাগাল্যান্ডের প্রত্যন্ত একটি গ্রামে মাটি খুঁড়লেই উঠে আসছে হীরের টুকরো-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন খবর ছড়িয়ে পড়তেই দলে দলে গুপ্তধন সন্ধানীরা ভিড় করছে গ্রামটিতে।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, চলতি সপ্তাহের গোড়ায় নাগাল্যান্ডের মন জেলার ওয়ানচিং গ্রামে টিলার উপরের জঙ্গল পরিষ্কার করার সময় মাটির নিচে বেশকিছু স্ফটিকের টুকরো খুঁজে পান কয়েকজন গ্রামবাসী। তাদের মুখ থেকে খবর ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে।
সবাই ধরে নিয়েছে, ঐ স্ফটিক নির্ঘাত হীরের টুকরো। সঙ্গে সঙ্গে তোলপাড় পড়ে যায় গ্রামজুড়ে। সবাই কোদাল-বেলচা-গাঁইতি কাঁধে পৌঁছে যান টিলার উপরের জঙ্গলে। শুরু হয় মাটি খুঁড়ে গুপ্তধন উদ্ধারের চেষ্টা। বাংলানিউজ
এদিকে অত্যুৎসাহীরা সেই ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে হীরে আবিষ্কারের গল্প ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো। তারপর ওয়ানচিং গ্রামে ভিড় জমতে শুরু করে হিরে সন্ধানীদের।
বাধ্য হয়ে বহিরাগতদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়ানচিং গ্রাম পঞ্চায়েত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সংক্রান্ত পোস্টের ওপরেও জারি হয়েছে কড়া বিধি-নিষেধ।
এদিকে মন জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের এই খবর পৌঁছেছে প্রশাসনের কানেও। উদ্ধার হওয়া স্ফটিকগুলো সত্যিই হীরে কি না তা খতিয়ে দেখতে ওয়ানচিং গ্রামের উদ্দেশে শুক্রবার রওয়ানা হয়েছেন চার ভূ-তাত্ত্বিক। আগামী ৩০ নভেম্বর অথবা ১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের গ্রামে পৌঁছানোর কথা।
সরেজমিনে তদন্তের পরে তারা রাজ্য সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে।
মন জেলার ডেপুটি কমিশনার জানিয়েছেন, মাটির নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া স্ফটিক আদৌ হীরে কি না তাই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। তবে হীরে না হলেও স্ফটিকগুলো কোয়ার্টজ জাতীয় পাথরের ভগ্নাবশেষ বলে মনে করছেন তিনি। বিভিন্ন কাজে সহায়ক হওয়ায় তার মূল্যও কম নয় বলে তার দাবি। ফলে তাতে স্থানীয়দের উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
তবে বিশেষজ্ঞরা অনুসন্ধান না করা পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য ভিত্তিহীন হবে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে নাগাল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-তত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক জি টি থং জানিয়েছেন, “পাথরগুলো সাধারণ কোয়ার্টজ স্ফটিক। নাগাল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্তে হামেশাই এই স্ফটিকের দেখা পাওয়া যায়।”
তার মতে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে কেউ সরল গ্রামবাসীদের ভুল বুঝিয়ে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। এর আগেও ঐ অঞ্চলে হীরের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে জানান এই অধ্যাপক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের উন্নয়নে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হচ্ছে : স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধকরোনায় আরও ৩৬ মৃত্যু