৬ মাস পর হাই কোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি চট্টগ্রাম আদালতে

রাঙ্গুনিয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সোবহান হত্যা মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২০ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

রাঙ্গুনিয়ায় চাঞ্চল্যকর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহান হত্যা মামলায় হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি চট্টগ্রাম আদালতে পৌঁছেছে। নিম্ন আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে সাজার রায় বহাল রেখে ছয় মাস আগে হাই কোর্ট ওই রায় দিয়েছিলেন। গত বৃহস্পতিবার ডাকযোগে হাই কোর্টের নথিপত্র চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পৌঁছেছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, হাই কোর্টের রায়ের কপি গ্রহণের চার সপ্তাহের মধ্যে আসামিরা জামিনে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে গ্রেপ্তারপূর্বক সাজার রায় কার্যকরের কথা বলা হয়েছে। ১৯৯১ সালের ৩০ অক্টোবর রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাণীরহাট বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে সোনারগাঁও এলাকায় আইয়ুব বাহিনীর সদস্যরা আবদুস সোবহানকে অপহরণ করে স্থানীয় পাহাড়ের জঙ্গলে নিয়ে যায়। পরে তাকে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় বাদী হয়ে নিহতের ছেলে বখতিয়ার আহমেদ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০০৬ সালে ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ এ এন এম বশির উল্লাহ এ হত্যা মামলায় ২১ আসামির মধ্যে ১৭ জনকে যাবজ্জীবন সাজা দেন। বাকি চার জনের মধ্যে দুইজন মামলা চলাকালে মারা যান এবং অপর দুইজন খালাস পান। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ৯ আসামি হাই কোর্টে জেল আপিল করেন। বাকিরা পলাতক ছিলেন। ২০১৯ সালের আগস্টে হাই কোর্ট জেল আপিল খারিজ করে আসামিদের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের দেয়া সাজার রায় বহাল রাখেন।
পরে ৯ আসামির মধ্যে আবুল হাসেম নামে এক আসামি হাই কোর্টে একটি ক্রিমিনাল আপিল দায়ের করেন। চলতি বছর ১৭ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট নিম্ন আদালতের সাজার রায় বহাল রেখে আসামির করা আপিল খারিজ করে দেন। হাই কোর্টের দেয়া ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি চট্টগ্রাম আদালতে বৃহস্পতিবার এসে পৌঁছে।
জানা গেছে, হাই কোর্টে নিম্ন আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা ৯ আসামির মধ্যে রাঙ্গুনিয়ার মূর্তিমান আতঙ্ক আইয়ুব বাহিনীর প্রধান আইয়ুব আলী সম্প্রতি আততাঁয়ীর গুলিতে মারা গেছেন। রাঙ্গুনিয়ার আরেক ত্রাস সিরিয়াল কিলার শহীদুল ইসলাম খোকন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। রাঙ্গুনিয়ায় জিল্লুর ভান্ডারী হত্যাকাণ্ড নামে আরেকটি চাঞ্চল্যকর মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তবে মুক্তিযোদ্ধা সোবহান হত্যা মামলায় তার জামিন আছে। বাকি সাত আসামির সবাই হাই কোর্টের জামিন নিয়েছিলেন।
নিহত সোবহানের বড় ছেলে ডা. উকিল তালুকদার গতকাল আজাদীকে বলেন, আটাশ বছর আগের এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা চালাতে গিয়ে আর্থিক, শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি চাকুরি হারিয়েছি। আসামিদের একজন আততাঁয়ীর গুলিতে মারা যাওয়ার ঘটনায় আমার বিরুদ্ধে করা ‘মিথ্যা’ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জেল খাটতে হয়েছে। এ মামলায় এখনও আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। এসময় তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক রায় কার্যকর করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনবজাগরণ ঘটায় আবৃত্তি
পরবর্তী নিবন্ধনগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদককে প্রাণনাশের হুমকি