২০১৫ সালে নগরীর আকবর শাহ এলাকার একটি বাসায় গোপন বৈঠকে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ,বোমা তৈরির সরঞ্জাম, জিহাদী বইসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির(জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ) চট্টগ্রাম জেলা কমান্ডারসহ চারজনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচারকার্য শুরু হয়েছে।
গতকাল ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভুঁ্ঞার আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মামলায় চার্জ গঠনের আদেশ দেন। এতে বহুল আলোচিত এ মামলার বিচারকার্য শুরু হয়েছে বলে আজাদীকে জানান আদালতের অতিরিক্ত পিপি মোহাম্মদ নোমান চৌধুরী। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের ধার্র্য্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
অতিরিক্ত পিপি বলেন, বিস্ফোরক উদ্ধার ও নাশকতামূলক কর্মকান্ডের অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পৃথক দুইটি মামলা হয়েছিল। এরমধ্যে মঙ্গলবার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত বিস্ফোরক মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের আদেশ দিয়েছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আরেকটি মামলা সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
বিচার শুরু হওয়া জেএমবি’র জঙ্গিরা হচ্ছেন- দিনাজপুরের সরকারপাড়া গ্রামের মো. রিয়াজুল ইসলামের ছেলে জেএমবি চট্টগ্রামের কমাণ্ডার এরশাদ হোসাইন (২০) প্রকাশ মামুন, জেএমবি সদস্য গাইবান্ধার তুলশীপাড়ার মৃত আক্তার হোসেন সরকারের ছেলে বুলবুল আহমেদ সরকার(২৬) প্রকাশ ফুয়াদ, ঝিনাইদহের কোর্ট চাঁদপুরের মমিনুল ইসলামের ছেলে মো. সুজন (২৪) ও কর্ণফুলী থানার ইছানগরের আব্দুল গণির ছেলে মাহাবুবুর রহমান প্রকাশ খোকন (৩৫)।
চার আসামির সবাই হাজতে রয়েছেন বলে জানান অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নোমান চৌধুরী।
মামলার এজাহারে জানা যায়, ২০১৫ সালে ২৩ মার্চ আকবরশাহ থানাধীন মীর আউলিয়া মাজার রোড সংলগ্ন একটি বাসায় জেএমবির গোপন বৈঠক চলছিল। এসময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য, বোমা তৈরির সরঞ্জাম, জিহাদি বইসহ এরশাদকে আটক করে। অভিযানকালে অন্য আসামিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ওই ঘটনায় আকবর শাহ থানার এসআই শহিদের রহমান বাদী হয়ে এরশাদকে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতনামা ২/৩জনকে আসামি করে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ (সংশোধিত ২০১৩) ও বিস্ফোরক উপাদানবলী (সংশোধন) আইন ২০০২ ধারায় মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, ২০১৫ সালে বিস্ফোরক ও বোমার তৈরির সরঞ্জাম, জিহাদি বইসহ গ্রেপ্তারের পর থেকে এরশাদ কারাগারে রয়েছেন। জিহাদি বইয়ের সাথে শাইখ আবু সুহাইব আব্দুল আযীমের লেখা ‘দুই শতাধিক ইমাম ও দায়ীদের ফতোয়া’ নামে চারটি বই উদ্ধার করা হয়।
২০১৫ সালের শেষের দিকে অন্য আসামিরা কর্ণফুলী থানায় দায়ের হওয়া ভিন্ন তিনটি মামলায় (৪(১০)১৫, ৫(১০)১৫ ও ৬(১০),১৫) পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিল। পরবর্তীতে তাদের তিনজনকে বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখান মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা।
২০১৬ সালের ৮ এপ্রিল ৪ আসামির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ও সন্ত্রাসবিরোধী আইনে পৃথক অভিযোগ এনে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট জমা দেন আকবর শাহ থানার তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ সোলায়মান।