নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক বছর যেতে না যেতেই সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের ২ কিলোমিটার অংশের ২০টি স্থানে ব্লক ধসে গেছে। ফলে বাঁধটিতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এটি আবারও সাগরে বিলীন হতে পারে, এমন আশংকা করছেন স্থানীয় লোকজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, প্রায় ৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বেড়িবাঁধটি নির্মাণ কাজ হয়। নির্মিত বেড়িবাঁধের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ১৫০ মিটার এবং প্রস্ত ৪ দশমিক ৩ মিটার। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তদারকির অভাবে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে বেড়িবাঁধে। কিন্তু পাউবো কর্তৃপক্ষের দাবি, অমাবস্যায় জোয়ারের পানি বৃদ্ধি ও প্রচন্ড ঢেউয়ের কারণে ব্লকের নিচের মাটি সরে গেছে। ফলে ব্লকগুলো স্থানচ্যুত হয়ে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালিয়াকুল এলাকায় ৩টি স্থানে, জমাদারপাড়া এলাকায় ৭টি স্থানে এবং আকিলপুর এলাকায় ১০টি স্থানের ব্লক সরে গেছে। এর মধ্যে জমাদারপাড়া ও আকিলপুরের দুটি ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে বেড়িবাঁধের মাটি সরে যেতে শুরু করেছে। স্থানীয় লোকজন জানান, বাঁশবাড়িয়া উপকূলে ১২ বছর ধরে বেড়িবাঁধ ছিল না। তখন বর্ষায় দিনে দুবার জোয়ারের পানিতে ডুবে যেত দুই ইউনিয়নের পাঁচগ্রামের বাড়িঘর। ভোগান্তি পোহাতে হতো তাদের। দুই হাজার হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হতো না। এলাকার পুকুর-জলাশয় ডুবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হতো স্থানীয়দের। আকিলপুর এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, বেডিবাঁধ নির্মাণের সময় ঠিকভাবে ব্লক বসানো হয়নি। এছাড়া নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। এক থেকে দশ বছরের মধ্যে বাঁধটি আবারও বিলীন হয়ে যেতে পারে। বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, বেড়িবাঁধে বসানো ব্লকগুলো খুবই নিম্নমানের। ব্লকগুলো বানানোর সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পাউবো’র চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলীকে অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান বলেন, গেল অমাবস্যায় জোয়ারের পানি অনেক বেড়েছে। সে সঙ্গে প্রচন্ড ঢেউ ছিল। এতে বাঁধের একাধিক স্থানে ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলেন তিনি।