রাঙ্গুনিয়ায় ইয়াছমিন আকতার (৩০) নামে এক গৃহবধূর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুনে ঝলসে দিয়েছে স্বামী মো. রাসেল (৩৫)। গতকাল শুক্রবার ভোররাতে উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড গোয়ালপুরা গ্রামের সন্দ্বীপপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এসময় রাসেল তার শাশুড়িকে ফোন করে জানান, ‘তোর মেয়েকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি, এসে নিয়ে যা।’ ইয়াছমিনের মাকে ফোনে মেয়ের আর্তচিৎকারও শোনায় রাসেল। যৌতুক দিতে না পারায় ইয়াছমিন আকতারের ওপর এই পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয় বলে তার স্বজনরা জানান। এতে তার শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। ইয়াছমিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা পাষণ্ড স্বামী মো. রাসেলকে (৩৫) আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। রাসেল সন্দ্বীপ পাড়ার মৃত মো. শফিকুল ইসলামের ছেলে। তাদের সংসারে ৪ বছরের একটা ছেলে সন্তান রয়েছে। ইয়াছমিন আকতার উপজেলার চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউনিয়নের নবগ্রাম এলাকার হারুনুর রশিদের মেয়ে। প্রায় আটবছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল।
গৃহবধূ ইয়াছমিনের চাচা চন্দ্রঘোনা কদমতলী ইউপি সদস্য আবদুল মালেক জানান, যৌতুকের দাবিতে ইয়াছমিনকে প্রায়ই নির্যাতন করত স্বামী রাসেল। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তারা ঘুমাতে যায়। এর মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে রাসেল ইয়াছমিনের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার বুকের নিচের অংশ ঝলসে যায়। পরে তাকে চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, শুক্রবার (গতকাল) বিকেলে পালানোর সময় রাসেলকে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করেছে পুলিশ। আটকের বিষয়ে তার কোনো বিকার নেই। নেই নিজের কৃতকর্মের জন্য ন্যূনতম অনুশোচনাও। উল্টো খোশমেজাজে পুলিশকে জানায়, সে গরুর মাংস দিয়ে ভাত খেতে চায়। এএসপি বলেন, থানা হাজতে বসে কাউকে এত নির্বিকারভাবে কথা বলতে আমি আর দেখিনি। তিনি বলেন, আমি নিজে চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে গিয়েছি। গৃহবধূর শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মাহাবুব মিল্কি বলেন, আগুনে ঝলসে দেয়া গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।