করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে দুই মাসের বেশি সময় দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দেড় হাজারের আশপাশে থাকলেও সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের শঙ্কা জাগিয়ে টানা তৃতীয় দিনের মত দুই হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর এসেছে। গতকাল বুধবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত একদিনে দেশে আরও ২ হাজার ১১১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। তাতে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ৩৮ হাজার ৭৯৫ জন। আর করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা ৬ হাজার ২৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার ২ হাজার ২১২ জন এবং সোমবার ২ হাজার ১৩৯ জনের শরীরে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তার আগের দশ সপ্তাহে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই হাজারের নিচেই ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এবং শীতের আগে আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসায় বাংলাদেশেও সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের বিষয়ে সতর্ক করে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৮৯৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৭৮৮ জন হয়েছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তা ২৬ অক্টোবর ৪ লাখ পেরিয়ে যায়। এর মধ্যে গত ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ২৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩২তম অবস্থানে। বিশ্বে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫ কোটি ৫৬ লাখ পেরিয়েছে; মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৩ লাখ ৩৮ হাজারের ঘরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৭টি ল্যাবে ১৬ হাজার ৪৬৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ২৫ লাখ ৮৯ হাজার ৪২১টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮০ দশমিক ৮৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৪ জন পুরুষ আর নারী ৭ জন। তাদের সবাই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ জন করে মোট ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১০ বছরের কম ছিল। মৃতদের মধ্যে ১৩ জন ঢাকা বিভাগের, ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন খুলনা বিভাগের এবং ১ জন করে মোট ৩ জন রাজশাহী, বরিশাল ও রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।