আনোয়ারা উপজেলার রায়পুর ও জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী সাপমারা খালের উপর একটি সেতুর আশায় এলাকাবাসীর কেটে গেছে চার দশকেরও বেশি সময়। নির্বাচন এলে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতা ও প্রার্থীরা বার বার সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতির ফুলঝুড়ি দিলেও ভোটের পর কথা রাখেনা কেউ। ফলে খালের উপর সাকোঁ হয়ে প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে মৎস্যজীবী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। রায়পুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জানে আলম বলেন, সাপমার খালের উপর সেতু নির্মাণ এলাকার মানুষের চলাচলের প্রাণের দাবি। তাই জনগুরুত্বের কথা বিবেচনা করে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। অতি শীঘ্রই এই সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে। জুঁইদন্ডী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোরশেদুর রহমান চৌধুরী খোকা জানান, সাপমারা খালের উপর বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে এলাকার বিভিন্ন পেশার মানুষ পার হয়। এবং চলাচলের মাধ্যম এই সাঁকোটি গুরুত্বপূর্ণ। তাই উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় একাধিকবার সাপমারা খালের উপর সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী তছলিমা জাহান বলেন, সাপমারা খালের উপর ত্রিশ মিটার পাকা সেতুর জন্য প্রকল্প মন্ত্রী পরিষদে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন এলেই দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের কষ্ট লাঘব হবে।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে সাপমারা খালের উপর একটি সেতুর দাবি উঠে। সেই থেকে যতগুলো নির্বাচন গেছে সবসময় এলাকাবাসীর এক নম্বরের দাবি থাকে সেতুটি। প্রার্থীরাও এলাকার লোকজনের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে প্রতিশ্রুতি দেন, স্বপ্ন দেখান। সেই স্বপ্ন আর বাস্তবে ধরা দেয় না। সরেজমিনে সাপমারা খালের সাঁকো এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুরোনো বাঁশে নির্মিত সাঁকোটিতে দুইজনের বেশি উঠলেই দুলে উঠে। সাঁকোর বাঁশ গুলো ফেটে গেছে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে দুই ইউনিয়নের বাসিন্দারা অনেক কষ্টে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, সাপমারা খালের সেতুটির উপর দিয়ে জুঁইদন্ডী ও রায়পুর এই দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষকে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। মাছ কেনার জন্য জুঁইদন্ডীসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে রায়পুর যেতে হয়। রায়পুরের বহু শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য জুঁইদন্ডী জে কে এস উচ্চ বিদ্যালয় ও আনোয়ারুল উলূম মাদ্রাসায় যায়। আনোয়ারা সদর বা চট্টগ্রাম শহরে যেতে হলে রায়পুরের লোকজনকে এই সাঁকো ব্যবহার করতে হয়। ২ বছর আগে স্থানীয় লোকজন সাঁকোটি মেরামত করলেও খালের জোয়ারের পানির ধাক্কায় সাঁকোটি আবারও নড়বড়ে হয়ে যায়। এখন মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে লোকজনকে চলাচল করতে হচ্ছে। যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে সাকোঁটি।