ইয়াবার বিনিময়ে অস্ত্র, ঠিকানা জানে না একে অপরের

আদালতে আসামির স্বীকারোক্তি

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৬ নভেম্বর, ২০২০ at ৯:৫০ পূর্বাহ্ণ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইয়াবার বিনিময়ে অস্ত্র সরবরাহকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা একে অপরের ঠিকানা জানে না। তবে তারা বিশেষ কৌশলে যোগাযোগের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার ইয়াবার লেনদেন করেছে। এসব ইয়াবার বিনিময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র সরবরাহ করেছে। গতকাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরোয়ার জাহানের আদালতে আব্দুর রাজ্জাক নামে ওই সিন্ডিকেটের একজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, রোববার আসামি আব্দুর রাজ্জাক ও কামালের পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে তাদের হাজির করা হয়। এরমধ্যে আব্দুর রাজ্জাক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বাকলিয়া থানার ওসি মো.নেজাম উদ্দিন গতকাল আজাদীকে বলেন, আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে আসামি রাজ্জাক তাদের সিন্ডিকেটের আরও ৮/৯ জনের নাম বলেছে। কিন্তু সিন্ডিকেটের এই লোকজন একে অপরের বাসা চেনে না। তাদের মধ্যে যোগাযোগ হতো মূলত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। মোবাইলে যোগাযোগ করে একটি নির্দিষ্ট জায়গার ঠিকানা দিয়ে তারা সেখানে দেখা করে ইয়াবার লেনদেন করে থাকে। এসব ইয়াবা লেনদেনের সময় সিন্ডিকেটের সদস্যরা মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখে। লেনদেন শেষে যতক্ষণ পর্যন্ত সিন্ডিকেটের লোকজন নিজেদের গন্তব্যে না পৌঁছবে ততক্ষণ তারা তাদের মোবাইলটি বন্ধ রাখে বলে জবানবন্দিতে রাজ্জাক জানিয়েছে।
ওসি বলেন, আসামি রাজ্জাকের দেয়া তথ্যনুযায়ী সিন্ডিকেটের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। জবানবন্দিতে রাজ্জাক জানায়, তাদের ইয়াবার কারবার শুধু চট্টগ্রামে নয়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের এজেন্ট রয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্র সরবরাহ করে সেখান থেকে আনা ইয়াবা পরে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় এজেন্টের মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যায়।
গত ৫ নভেম্বর রাত ১২টার দিকে বাকলিয়া থানার শাহ আমানত সেতু এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি পিস্তল ও দুটি ম্যাগজিনসহ রাজ্জাক (২১) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার টেকনাফের হ্নীলার লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও অভিযান চালিয়ে মো. কামাল (৪০) নামে আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কামালের কাছে সেই অস্ত্র যাওয়ার কথা ছিল। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে উঠে আসে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অস্ত্রের বিনিময়ে সেখানকার ইয়াবা চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। গত সোমবার পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আসামি রাজ্জাক ও কামালের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদোহাজারীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
পরবর্তী নিবন্ধবায়েজিদে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা