ব্যবহার ছাড়াই নষ্ট অর্ধ কোটি টাকার মেশিন

চসিকের বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন প্রকল্প

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৬ নভেম্বর, ২০২০ at ৯:২৮ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন প্রকল্পের অর্ধ কোটি টাকার একটি মেশিন ব্যবহার ছাড়াই নষ্ট হয়েছে। এমন অভিযোগ ওঠার পর তা তদন্ত করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তবে তদন্ত করতে গিয়ে মেশিন কেনার প্রক্রিয়াতেই ঘাপলা খুঁজে পেয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কমিটি।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, হালিশহর আনন্দবাজারে বিদ্যমান বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন প্লান্ট আরো গতিশীল করতে ২০১০-১১ অর্থবছরে দাতা সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক আড়াই কোটি টাকা সাহায্য করে। এর মধ্য থেকে ৫০ লাখ ৩৩ হাজার টাকায় একটি অটো ওয়েট অ্যান্ড প্যাকেজিং মেশিন কেনা হয়। ওই মেশিন দিয়ে প্লান্টে উৎপাদিত জৈব সার প্যাকেট করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, মেশিনটি কেনার পর একদিনও ব্যবহার হয়নি। অভিযোগটি পেয়ে দুদক বিষয়টির অনুসন্ধান শুরু করে। এর অংশ হিসেবে গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালক ও যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক এ কে এম সোহেল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়ে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশনা দেন। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নাজনীন ওয়ারেস গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিভাগের স্থানীয় সরকার পরিচালককে চিঠি দিয়ে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন প্রেরণের নির্দেশনা দেন। সর্বশেষ ১১ নভেম্বর এ বিষয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) ও স্থানীয় সরকার পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের দপ্তরে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অনিয়মের বিষয়ে শুনানিতে অংশ নেওয়া প্লান্ট ম্যানেজার ইউসুফ খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো কথা বলতে পারব না। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) ও স্থানীয় সরকার পরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আজাদীকে বলেন, তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। দুয়েকদিনের মধ্যে শেষ করে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেব।
সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে কারা শুনানিতে অংশ নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান প্রকৌশলীকে চিঠি দিয়েছিলাম। উনি যান্ত্রিক বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীসহ প্রজেক্টের সাথে জড়িত কয়েকজনকে পাঠিয়েছেন। তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন।
একদিনও মেশিন ব্যবহার না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়দিন ব্যবহার হয়েছে এটার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রকিউরমেন্ট সঠিকভাবে হয়নি। যে প্রতিষ্ঠান মেশিন সরবরাহ করেছে তাদের ঠিকানায় আমি লোক পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব পাইনি। সিটি কর্পোরেশন থেকে যারা এসেছেন তারাও সঠিকভাবে কাগজপত্র দিতে পারেননি। কাজেই মনে হয়েছে এখানে ঘাপলা আছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চসিকের এক প্রকৌশলী বলেন, ২০১০ সালে মেশিনটি কেনা হয়। মেশিনটি দিয়ে অটো ও ম্যানুয়েল দুইভাবে কাজ করা যায়। কিছুদিন আগে অটোমেটিক সিস্টেমের সুইচগুলো নষ্ট হয়ে যায়। তখন আমরা ম্যানুয়েলি ব্যবহার করি। কিন্তু প্লান্ট একদিনও বন্ধ ছিল না। দুদিন আগে অটোমেটিক সুইসগুলো ঠিক করেছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুরুব্বিরা আমির বানাইয়া দিছে – বাবুনগরী
পরবর্তী নিবন্ধপাল্টা কমিটির পথে পদবঞ্চিতরা