ঝুঁকির মুখে রাঙামাটি ফিশারি সংযোগ সড়ক ও বাঁধ

রাঙামাটি প্রতিনিধি | রবিবার , ১৫ নভেম্বর, ২০২০ at ৯:১৭ পূর্বাহ্ণ

পর্যটন শহর রাঙামাটি প্রবেশ করেই যে পথটি পথিককে মুগ্ধ করে সেই সড়কটির নাম শহরের ফিশারি সংযোগ সড়ক। রাঙামাটি শহরে যে কোন ট্যুরিস্ট ঘুরতে আসলে যে বাঁধটি সকলের নজর কাড়ে সেই সড়কটি এখন ঝুঁকিতে আছে। ফিশারি সংযোগ সড়কের ঠিক মাঝখানেই মাত্র আধ কিলোমিটার সড়ক কাম বাঁধের দুইপাশে সারি সারি কৃঞ্চচূড়া, কড়ই, জামরুলসহ নানা প্রজাতির বৃক্ষ তৈরি করেছে এক নয়নাভিরাম আবহ।
এদিকে, সংযোগ সড়কটির উভয়পার্শ্বে বেশ কয়েকটি স্থানে ফাটল, বড় বড় গর্ত তৈরি এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে সড়কের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলায় সড়কের অতিরিক্ত চাপ ও কম্পনে সড়কটির বিভিন্নস্থানে ভেঙে পড়া বা ধসে পড়ার ঝুঁকিতে। রাঙামাটি শহরবাসীর পাশাপাশি এমনকি নানা উপলক্ষে এই শহরে বেড়াতে আসা অতিথিদেরও অত্যন্ত প্রিয় এই স্থানটি। কিন্তু এই সড়কে কোন ফুটপাত না রেখেই সড়ক সম্প্রসারণ এবং বর্ষাকালে সড়কের দু্‌পাশেই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পুরো সড়কটি এখন ঝুঁকির মধ্যে। ইতিপূর্বে সড়কটির দুইপাশে বৃক্ষ ছিল ৫০৬ টি আর বর্তমানে কেবল সড়কের দুইপাশের বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষ রয়েছে মাত্র ৩০০ টি, সেগুলোও এখন বেশ ঝুঁকিতে। ইতোমধ্যে পানির টানে তলের মাটি সড়ে যাওয়ায় উপড়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি বৃক্ষ। এনিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে রয়েছে উদ্বেগ। সড়কটি সরেজমিনে পরিদর্শনে কথা হয় পথচারী দীপ্ত হান্নান ও মো. শাহ আলমের সাথে। তারা বলেন, আমাদের জন্ম এই রাঙামাটি শহরে। ছোটবেলা থেকে এ সড়কটি দিয়ে চলাচল করছি। কিন্তু বর্তমানে সড়ক এবং বৃক্ষগুলোর অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমরা সড়কটির আশু সংস্কার প্রত্যাশা করছি।
এদিকে, রাঙামাটি নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব এম জিসান বখতেয়ার বলেন, রাঙামাটিতে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা কাজ করছে। সমন্বয়হীনতার অভাবে তিন এলাকার এই জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি এবং গাছগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই অতি দ্রুত সময়ে এই সড়কটি সংস্কার করা হোক। এদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির পাশে বেশকিছু স্পিড বোটের ঘাট এবং সড়কটিতে সংকীর্ণ সংযোগ বাঁধে গাড়ি পার্কিং এবং পণ্য উঠানামার কারণে প্রতিনিয়তই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কটি। অন্যদিকে, সংযোগ সড়কটির উভয়পাশ্বে বেশ কয়েকটি স্থানে বড় বড় গর্ত তৈরি এবং অপ্রয়োজনীয়ভাবে সম্প্রসারিত অংশের উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলায় সড়কের অতিরিক্ত চাপ ও কম্পনে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙে পড়া বা ধসে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হওয়ার প্রেক্ষিতে ঝুঁকিতে শহরের তবলছড়ি, বনরূপা এবং রিজার্ভবাজারের মধ্যবর্তী যোগাযোগের একমাত্র এই সংযোগ সড়কটি। রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহে অরেফীন বলেন, সড়ক বিভাগের পক্ষ থেকে এ ফিশারি বাঁধ এলাকায় বাঁধ কিংবা বড় আকারের প্রকল্প হাতে নেয়ার কোন সুযোগ নেই। সড়ক বিভাগ শুধু রাস্তাটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য যতুটুকু করা যায় বিভিন্ন সময়ে তাই করা হয়েছে। তিনি বলেন, ৬শ মিটার এ বাঁধে আমরা ৩ টি ঝুঁকিপূর্ণ স্পট চিহ্নিত করে পিলার দেয়া হয়েছে যাতে কোন গাড়ি পড়ে না যায় এবং রাস্তাটিকে রক্ষা করার স্বার্থে। এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, ফিশারি সংযোগ সড়কটির দুপাশ্বে সৌন্দর্য্যবর্ধন ও সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন আছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে কর্ণফুলী বেসিন স্ট্যাডি প্রজেক্ট নামে একটি সার্ভে প্রকল্প চলমান আছে। এটি সম্পূর্ণ হলে ফিশারি সংযোগ সড়কসহ ঐ প্রকল্পের নির্দেশনার আলোকে পরবর্তীতে বৃহৎ আকারে রাঙামাটি জেলায় প্রকল্প গ্রহণ করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরীতে দুই গৃহবধূর আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধটেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে মাদক কারবারির মৃত্যু