বাংলাদেশের জান সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচাইতে বড় বিজ্ঞাপনের নাম সাকিব আল হাসান। কিংবা বিশ্ব সেরা অল রাউন্ডার। আরো কত কত বিশেষণ। সে সব বিশেষণ কেন সাকিবের নামের পাশে সেটা অনুধাবন হয়তো অনেকেই করতে পারবেনা। সাকিব অনন্য। সাকিব একেবারেই আলাদা। সাকিব স্বতন্ত্র। কেন ? জবাবটা দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাথে যিনি দীর্ঘ চার দশকের মত নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন সেই আকরাম খান। সাকিবের যোগ্যতা কিংবা প্রতিভা এসব নিয়ে মোটেও বিন্দু মাত্র সন্দেহ নেই কিং খানের। নির্বাচক, প্রধান নির্বাচক, বোর্ড পরিচালক। সব মিলিয়ে একেবারে কাছে থেকেই সাকিবকে পরখ করে আসছেন আকরাম খান। তাইতো গতকাল চোখ বুজে বলে ফেললেন সাকিব যেন ক্রিকেটের ছাই ছাপা আগুন। যেটি সময় মতই জ্বলে উঠে।
গত এক বছর ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ ছিলেন সাকিব। ক্রিকেট বোর্ডের কোন সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারেননি। মাঝখানে কেবল ১৫ দিনের জন্য অনুশীলন করতে পেরেছিলেন বিকেএসপিতে। এরপর চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। কিন্তু গতকাল ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষায় সাকিবের স্কোর দেখে সবার চোখ যেন কপালে উঠার উপক্রম। এটা কিভাবে সম্ভব ? গত তিন মাস ধরে কিংবা গত এক বছরে অনেক ম্যাচ খেলা ক্রিকেটাররা যেখানে ন্যুনতম স্কোর ১১ করতে হিমসিম খাচ্ছে সেখানে সাকিবের স্কোর কিনা ১৩.৭ ! তবে সাকিবের এই স্কোরে মোটেও অবাক নন আকরাম খান। তিনি বলেন আমি জানতাম সাকিব নিজেকে প্রস্তুত করেই রেখেছিলেন। তার ফিটনেস লেভেল কতটা শক্ত সেটা তিনি প্রমাণ করেছেন এই স্কোর করে। গতকাল পর্যন্ত ১১৩ জন ক্রিকেটার ফিটনেস টেস্ট দিয়েছেন। যার মধ্যে চারজন ক্রিকেটার ১৩ এর উপরে স্কোর করতে পেরেছেন। আর এই চারজন ক্রিকেটারই বয়সে তরুণ। সাকিবের সম সাময়িক ক্রিকেটারদের ১১ পার হতেই ঘাম ঝরাতে হয়েছে। কিন্তু সাকিব যেন অনন্য।
আকরাম খান জানান সাকিব ভেতরে ভেতরে নিজেকে তৈরি করছিলেন নিজের মত করে। যেটা তিনি কাউকে বুঝতে দেননি। দেশে এসে যেমন কঠোর অনুীশলন করেছেন তেমনি দেশের বাইরে থাকলেও নিজের রুটিন কাজটা চালিয়ে গেছেন। নিজের ভেতরে যে সহজাত প্রবৃত্তি সেটা সঠিক সময়েই বের করে এনেছেন সাকিব। যে কারণে ফিটনেসের দিক থেকে সাকিব যে সবাইকে ছাড়িয়ে সেটা তিনি আরো একবার প্রমাণ দিলেন। এতো গেল ফিটনেসের কথা। এবার মাঠের লড়াই সামনে। কেমন করবেন সাকিব। আকরাম খানের প্রত্যাশার পারদটা এবার আরো বেশি উচুঁ। বিসিবির এই পরিচালক জানান মাঠের পারফরম্যান্সেও এবার সাকিব নিজেকেও ছাড়িয়ে যাবেন। তিনি বলেন আগেও বলেছি তার যোগ্যতা নিয়ে কোন ধরনের সংশয় নেই। আর মাঠে সাকিব নামা মানেই শতভাগের বেশি দেওয়া। তার উপর একটা বিশাল জেদকে সরিয়ে মাঠে নামবে সাকিব। তার চাইতেও বড় কথা ঘরোয়া ক্রিকেট দিয়েই সাকিবের মাঠে ফেরাটা হচ্ছে। যে কারণে সাকিব নিজেকে ছাড়িয়ে আরো উচ্চতায় নিয়ে যাবে মাঠের লড়াইয়ে তেমনটি প্রত্যাশা আকরাম খানের। বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, সাকিব মাঠে নেমে সব সময় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। তিনি কতটা কোয়ালিটি ক্রিকেটার সে প্রমাণ তিনি বারে বারে দিয়েছেন। এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সাকিবের ফেরাটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সবচাইতে বড় একটা সুখবর।
তিনি বলেন সাকিব জানেন তার কখন মাঠে নামতে হবে। আর মাঠে নেমে কি করতে হবে। নিজের ফিটনেস ধরে রেখে শুধু নয় বরং উন্নতি ঘটিয়ে সাকিব যেমন জানান দিলেন তেমনি মাঠের লড়াইয়ে সাকিব আরো বড় বার্তা দেবেন বলেও বিশ্বাস আকরাম খানের।
ক্যারিয়ারে খুব বেশি কঠিন সময় পার করেননি সাকিব। যেটুকু সমস্যায় পড়েছিলেন সেটা পার করেছেন দৃঢ়তার সাথে। এবারেও তাই সাকিববে আরো শাণিত দেখবে বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীরা তেমনটি মনে করেন আকরাম খান।