ঢেউয়ের ধাক্কায় ধুয়ে গেছে স্লুইচগেটের ওপরের বেড়িবাঁধের মাটি। ১০ ফুট প্রস্থের বেড়িবাঁধ এখন এক ফুটে দাঁড়িয়েছে। শুধু মাটি নয়, স্লুইচগেটের পাইপগুলোও ভেঙে যাচ্ছে। গত বছর বর্ষার আগে বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে গাছের খুঁটি লাগানো হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে থাকলেও ভেতরের মাটি ভেসে গেছে। সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের সিকদারখালের ওপর নির্মিত স্লুইচগেট ও বেড়িবাঁধের চিত্র এটি। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় স্লুইচগেটটি এখন প্রায় অকেজো। উপকূলে প্লাবন ঠেকাতে স্লুইচগেটি পুনঃনির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। না হলে চলতি বছরের জোয়ারে সাগরের নোনা পানি লোকালয়ে ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে।
স্থানীয় কৃষক আবদুল আজিজ বলেন, পাঁচ বছর আগে স্লুইচগেটের বাইরের অংশের ব্লকের নিচের মাটি সরতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে পুরো অংশের মাটি সরে যায়। ভেঙে যায় ব্লক। এরপর স্লুইচগেটের পাইপের অংশ বিশেষ ভেঙে যায়। ভেসে যেতে থাকে স্লুইচগেটটির উপরের মাটি। গত বছর স্থানীয় চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর উদ্যোগ নিয়ে বেড়িবাঁধের ভাঙন ঠেকাতে গাছের খুঁটি গেড়ে বালির বস্তা দেন। কিছুতেই কিছু টিকলো না।
রুহুল আমিন নামে আরেকজন কৃষক জানান, দেড় একর জমি চাষ করে সংসার চালান তিনি। বেড়িবাঁধের কাছেই তার জমি। বাঁধটি ভাঙলে জোয়ারের লবণ পানি ঢুকে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে যাবে তার। দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তার। দ্রুত স্লুইসগেট ও বাঁধটি সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্র জানায়, পাইপ স্লুইচগেটটি চারটি পাইপ রয়েছে। এটি অন্তত ৪০ বছর আগে নির্মিত। ফলে দুর্বল হয়ে পড়েছে। বেড়িবাঁধের উপরের প্রস্থ ১০ ফুট। কিন্তু সেটি ভেঙে এখন হাঁটার অংশসহ এক ফুটে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় চেয়ারম্যান শওকত আলী জাহাঙ্গীর জানান, দীর্ঘ পাঁচ বছর পাউবো কর্মকর্তাদের কাছে ধরণা দিয়েও স্লুইচগেটটি সংস্কার করাতে পারেননি। আপদকালীন ভাঙন ঠেকাতে গত বছর বর্ষার আগে সাড়ে চার লাখ টাকা ব্যয়ে ভাঙন অংশে বালির বস্তা দেন। সেগুলো ধরে রাখতে গাছের খুঁটি দিয়ে তা লোহার তার দিয়ে টানা হয়। এখন খুঁটিগুলো দাঁড়িয়ে থাকলেও বালির বস্তাগুলো সরে গেছে। বাঁধটি সংস্কারে স্থানীয় সংসদ সদস্য একাধিকবার ডিও লেটার দিলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনিছ হায়দার খান বলেন, স্লুইচগেটটি নতুনভাবে নির্মাণ ও বেড়িবাঁধ সংস্কারের একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আপদকালীন ভাঙন ঠেকাতে জরুরি বরাদ্দও এক মাস আগে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনোটির বরাদ্দ না পাওয়ায় সংস্কার করা যাচ্ছে না। বরাদ্দ পেলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার করা হবে।