কবি শামসুর রাহমানকে পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করে বলতে চাই, আমিও আপনার নীতিতে অটল। আপনার এ বাণী শুধু বাণী নয় বরং ভিন্ন মতবাদীদের শান্ত, সহিষ্ণু ও স্থির হওয়ার পরম মন্ত্র। অবশ্যই ধর্ম মানবো, কিন্তু ধর্মের অপব্যবহার কেনো করবো? আজকাল কিছু হলেই ধর্ম নিয়ে হইচই! পর্দার অন্তরালে কাজ করছে গুটি কতক অন্ধ কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ অথচ আমার- আপনার পুরো ধর্ম নিয়ে টানাটানি। কিন্ত কেনো? সকল দেশেই একই চিত্র দৃশ্যমান। কখনো মসজিদে হামলা,কখনো দেবালয়ে,কখনো গীর্জায় বা মন্দিরে!
একদল যারা অতিরিক্ত ‘ঈশ্বরে বিশ্বাসী’, অন্যদল যারা ‘ঈশ্বরে অবিশ্বাসী’। এরা স্বীয় মনোভাব দেখাতে গিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন তা বুঝতে পারছেন না বা বুঝতে চান না। জন্মের পর থেকে প্রত্যেকেই নামের আগে বা পরে পদবী ব্যবহার করেন। সেই পদবীই জানিয়ে দেয় আমরা কে কোন ধর্মের? তাই আমার ধর্ম আছে, তাকে আমি অস্বীকার করি কী করে? আমরা বলি থাকি ‘ মানবতাই ধর্ম’। কিন্তু সত্যিকারের ধর্ম কী মানবতা শেখায় না? প্রত্যেক ধর্মেই মানবতার কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু নীতিগত অন্ধবিশ্বাসের ফলে একধরনের উগ্রবাদী চিন্তাধারা আমাদের একত্র হতে না দিয়ে বরং দিনের পর দিন অতলে তলিয়ে দিচ্ছে। এর সুবিধা নিচ্ছে একশ্রেণির মধ্যপন্থী। আর সকল অত্যাচার, অবিচার সহ্য করছে সাধারণ নিরীহ মানুষ। প্রত্যেক ধর্মই বলে, নিজ ধর্ম পালন করো,অন্য ধর্ম শ্রদ্ধা করো। কে মানছে এই কথা? বিচার মানি কিন্তু তালগাছ আমার– এই মানসিকতা! তাই যদি না হবে, তাহলে কোথায় কী ঘটলো তা বিচার বিবেচনা না করে ধর্মীয় স্থানগুলোকে বিক্ষত করার কোনো মানে হয়না। সত্যিকারের ধর্ম যেমন মানুষকে পুড়িয়ে মারেনা, খুন করতে শেখায় না। নিপীড়ন-নির্যাতন বা ধর্মীয় স্থান, ঘরবাড়িতে হামলা করতে নির্দেশ দেয় না। তেমনি স্রষ্টাকে এড়িয়ে যাওয়ার মানেও হলো নিজের অস্তিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করানো! এই পৃথিবী কেউ একজন পরিচালনা করছেন,এই বিশ্বাসটুকু রাখতে হবে।