নগরীর পশ্চিম মাদারবাড়িতে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী সানু মিয়া (৩২) নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে আদালত আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন। গতকাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭’র বিচারক মুনসী আব্দুল মজিদের আদালত আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। রায় শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
২০১৭ সালের ১৫ জানুয়ারি পশ্চিম মাদারবাড়ির জমির উদ্দিন লেনের একটি ভাড়া বাসায় ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে ইতি বেগমের (২৪)। যৌতুকের দাবিতে মারধরের এক পর্যায়ে হত্যার অভিযোগে ঘটনার দিনই নিহতের স্বজনসহ স্থানীয়রা সানু মিয়াকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। ওই ঘটনায় সদরঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০, (সংশোধিত ২০০৩)’র ১১(ক) ধারায় তার বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
এবিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার আরিফুল আলম আজাদীকে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ মামলাটির সাক্ষী উপস্থাপন থেকে শুরু করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারকার্য শেষে রায় ঘোষণা করা হয়। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে।
আদালতের রায়ে বলা হয়- উচ্চ আদালতের অনুমোদন সাপেক্ষে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। আর্থিক জরিমানার টাকা ইতি বেগমের পরিবার পাবে।
অ্যাডভোকেট খন্দকার আরিফুল আলম বলেন, তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ রয়েছে আসামিপক্ষের ।
এদিকে রায় ঘোষণার পর নিহতের মা রোকেয়া বেগম সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি গতকাল আজাদীকে বলেন- দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার করে আসামিকে শাস্তি দেয়ায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে। এসময় নিহতের একমাত্র সন্তান সাড়ে পাঁচ বছরের হামদু মিয়াকেও সাথে নিয়ে এসেছিলেন রোকেয়া। ২০১৭ সালে হামদুর বয়স ছিল মাত্র আড়াই বছর। তখন থেকেই হামদু মিয়াকে নিজের কাছে রেখে বড় করছেন রোকেয়া।
এর আগে সদরঘাট থানায় মামলাটি দায়েরের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি একমাত্র আসামি সানু মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৭ সালে ৬ জুলাই আদালত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচারকার্য শুরু করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি সানু মিয়া বি-বাড়িয়া জেলার নাছিরপুর গ্রামের মো. সিরাজ মিয়ার ছেলে। হত্যাকাণ্ডের তিন বছর আগে তারা বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল।